চট্টগ্রামে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিতে নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাঙ্ক্ষিত অনুপস্থিতিতে দলের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দলের শীর্ষ দুই নেতাই সংগঠনের নিষ্ক্রীয় নেতাকর্মীদের সমালোচনা করে বলেছেন, দায়িত্ব পালন না করলে সসম্মানে পদ ছেড়ে দিন। অন্যথায় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে ‘স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষায় সরকারের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে আমরা আলোর পদযাত্রী’ শীর্ষক সমাবেশ নগরীর শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটানের ঘোষণা ছিল নগর আওয়ামী লীগের। এ লক্ষ্যে শহীদ মিনারের সামনের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। কিন্তু কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের আশানুরূপ উপস্থিতি ছিল না। নগর কমিটির কয়েকজন সহ-সভাপতি ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং নির্বাহী কমিটির বেশ কিছু সদস্য সমাবেশে অনুপস্থিত ছিলেন। ফলে সমাবেশ মঞ্চের সামনে ছাড়া পুরো সড়কই ছিল ফাঁকা। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের মধ্যে মাত্র উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত আসনের সাংসদ বেগম সাবিহা নাহার মুসা। হাতোগোণা কয়েকটি ওয়ার্ড ও থানা থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন।
সভাপতির বক্তব্যে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে ৬০ জন নেতা আছেন। এই ৬০ জন অবশ্যই তার অন্যান্য নেতাকর্মী নিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে আসবেন। একা আসলে হবে না। আমি আসলাম, মিটিং এর সামনে বসে বসে পা নাড়ালাম, তা হবে না। বহুত সহ্য করছি। একদিন দুইদিন তিনদিন। আর সহ্য নয়। তিনি বলেন, আমার বয়স হয়েছে। চলাফেরা করতে কষ্ট হয়। তবুও আমি সব সভা-সমাবেশে আসি। কষ্ট হোক, আমি বেঁচে তো আছি। যতদিন বেঁচে থাকব, দলের জন্য কাজ করে যাব। এখন দল ক্ষমতায়। সে জন্য অনেকে কর্মসূচিতে আসছেন না। তারা নিজের লাভের জন্য দল করছেন। আমাদের কর্মীদের অনেকে একটু দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন। তবু যারা এসেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ।
আ জ ম নাছির উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা যারা দল করছি, কে কোন পদে আছি সেটা বড় কথা নয়। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দলের জন্য কাজ করতে হবে। অনেকে পদে আছেন অথচ দায়িত্ব পালন করেন না। দলের সভা-সমাবেশে আসেন না। এটা আর হবে না। তিনি বলেন, আমাদেরও তো কাজ থাকে। আমরাও তো বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করি। অথচ আমরাই সভা-সমাবেশে উপস্থিত থাকি। আমরা পারলে আপনারা পারবেন না কেন? পদ নিয়ে বসে থাকবেন, সভা-সমাবেশে আসবেন না, এটা হবে না। শুধু মহানগরের কথা বলছি না, তৃণমূলের ওয়ার্ড-ইউনিটের নেতাকর্মীদের কথাও আমি বলছি।
নগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, সংসদ সদস্য সাবিহা মুসা, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, নগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, উপ-প্রচার সম্পাদক শহীদুল আলম, বাকলিয়া ওয়ার্ডের, নেতা সিদ্দিক আলম, কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ বাচ্চু প্রমুখ।