রাজধানীর সন্নিকটে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে আগামী শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বিশ্ব তাবলীগ জামাতের দ্বিতীয় বার্ষিক মহাসম্মেলন। সারা মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় মহাসম্মেলনের ৫২তম বিশ্ব ইজতেমা। শুক্রবার শুরু হয়ে ১৫ জানুয়ারি রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব-ইজতেমার প্রথম পর্ব।
এর পর ৪দিন বিরতি দিয়ে ২০শে জানুয়ারি শুরু হবে এর দ্বিতীয় পর্ব। ২২ জানুয়ারী রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার উভয় পর্ব। এ উপলক্ষে পুরো ময়দানে তাবলিগ জামাতের অনুসারী সদস্য, মাদ্রাসা, স্কুল কলেজের ছাত্র-শিক্ষক ও স্থানীয় জনগণ দূর থেকে এসে প্রতিদিন দলে দলে শত শত মুসল্লি স্বেচ্ছা শ্রম দিয়ে যাচ্ছে। কেউ মাটি কাটা, খুঁটি গাথা, ময়লা আবর্জনা পরিস্কার, বাঁশ ও সুবিশাল চটের শামিয়ানা তৈরীর যাবতীয় কাজ করছে। তুরাগ নদের তীরবর্তী ১৬০ একর জমি বিস্তৃত ইজতেমা ময়দান প্রস্তুতের কাজ শেষ পর্যায়। দেশ বিদেশী আগত মুসল্লিদের জন্য উত্তর পশ্চিমে তৈরী হচ্ছে বয়ান মঞ্চ।
বয়ান মঞ্চের পশ্চিম পাশেই নির্মান হয়েছে বিদেশী মেহমানদের থাকার ঘর। এছাড়া মুসল্লিদের পারাপারে তুরাগ নদের ওপর ৭টি ভাসমান ব্রিজ নির্মান করা হবে। এবারের ইজতেমায় প্রথম পর্বে ১৭ জেলা এবং দ্বিতীয় পর্বেও ১৭ জেলার মুসল্লিরা শরিক হবেন। যারা গতবার অংশ গ্রহন করেছেন তারা এবারের বিশ্ব ইজতেমায় অংশ গ্রহন করতে পারবে না।
ইজতেমা ময়দান মুরব্বি গিয়াস উদ্দিন বলেন, "শেষ প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে, আগামী শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হবে ৫২তম বিশ্ব ইজতেমা। ১ম দফায় পুরো মাঠকে ২৬টি খিত্তায় এবং পরের দফায়ও ২৬টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এবারের ইজতেমায় বিশ্বের ৫০-৬০টি দেশের প্রায় ২৫-৩০ হাজার বিদেশী মেহমান আখেরী মোনাজাতে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।"
দেশী-বিদেশী ইসলামী চিন্তাবিদ ও ওলামায়ে কেরামগণ ছয় উসুল যথা - ঈমান, নামাজ, এলেম ও জিকির, একরামুল মুসলিমীন, তাসহীহে নিয়ত, দাওয়াত ও তাবলীগ সম্পর্কে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনামূলক মূল্যবান বয়ান রাখবেন। মূল বয়ান সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ভাষায় তরজমা করা হবে।
গাজীপুর সিটি মেয়র(ভারপ্রাপ্ত) আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, "বিশ্বখ্যাত এই ধর্মীয় ইবাদত অনুষ্ঠানে আগত মুসল্লিদের যাতায়াত, থাকা-খাওয়া, পানি ও নিরাপত্তাসহ যাবতীয় বিষয়ে সুশৃংখল রাখতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এর পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। এগুলো দেখাশুনার জন্য সিটির নির্বাচিত কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করা হবে।"
স্থানীয় এমপি জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, "ময়দানে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়দানের অবকাঠামো উন্নয়নে এপর্যন্ত একশ ষোল কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। সরকারে পক্ষ থেকে মুসল্লিদের সেবায় সবধরনের সহযোগীতা থাকবে।"
বিডি-প্রতিদিন/ ৬ জানুয়ারি, ২০১৬/ আব্দুল্লাহ সিফাত-১৩