সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহে ফুটপাত দখল করে স্থাপন করা হয়েছে আওয়ামী লীগের কার্যালয়। স্থানীয় কয়েকজন ‘সুবিধাভোগী’ নেতা দলীয় কার্যালয়ের নামে ফুটপাত দখল করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রায় দেড় বছর ধরে সেই কার্যালয় বহাল তবিয়তে রয়ে গেলেও এর বিরুদ্ধে কোনো ‘অ্যাকশন’ নিচ্ছেন না দলটির শীর্ষ নেতারা।
নজরে পড়ছে না আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের, এমনকি পুলিশ প্রশাসনেরও। দলটির মহানগর শাখার সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান জানিয়েছেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এমন ঘটনা 'দুঃখজনক' বলেও মন্তব্য করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় এই নেতা।
এর আগে গত বছরের মাঝামাঝিতে হঠাৎই নজরে পড়ে শাহী ঈদগাহ মিনারের ঠিক উত্তর দিকের ফুটপাত দখল করে একটি টিনশেডের ঘর। তার ঠিক সামনে একটি সাইনবোর্ড টানানো রয়েছে। যাতে লেখা আছে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ, শাহী ঈদগাহ, সিলেট।’ সেখানে রাখা রয়েছে একটি টেবিল এবং তিনটি বেঞ্চ। স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা এখানে বসে আড্ডা দেন বলে জানা গেছে।
এর আগে গত বছরের মাঝামাঝিতে এখানে এই সাইনবোর্ড সাটানো অবস্থায় বিক্রি করা হয়েছে গরুর মাংসও। এর পিছনেও ছিলেন সেই আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। তবে ওই কার্যালয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের কোনো দলীয় কার্যক্রম না চলে না।
স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন- ‘শাহী ঈদগাহের উত্তর পাশে ফুটপাতে প্রতিদিন অস্থায়ী বাজার বসে থাকে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে বসে সেখানে। ওই ফুটপাতের উপর সম্প্রতি নজর পড়ে স্থানীয় কয়েকজন নেতার।
তারা বলেন, ফুটপাত দখল ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা ওঠানোর দুরভিসন্ধি নিয়ে তারা কয়েকদিন আগে ফুটপাতের একটি অংশ দখল করে একচালা একটি ঘর নির্মাণ করেন। অফিসে ঢুকানো হয় কয়েকটি বেঞ্চি। সন্ধ্যার পর মাঝে মধ্যে সেখানে স্থানীয় যুবকরা আড্ডা দেয়। তবে কখনো ওই কার্যালয়ে দলীয় কোন কর্মসূচি বা সভা হয়নি।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, শাহী ঈদগাহে ফুটপাত দখল করে যারা আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণ করেছে তারা হচ্ছে দলের সুবিধাভোগী লোকেরা। এরা দলের ভাবমূর্তির দিকে লক্ষ্য না করেই নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। চাঁদাবাজি করছে। এদের চিহ্নিত কওে দ্রুত এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এই প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি তিনি জানেন না। কেউ তাকে বলেনি। দ্রুত এই কার্যালয় ভেঙে দেয়া হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭/ফারজানা