কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেছেন, কারা ইতিহাসে প্রথম বৃহস্পতিবার বন্দিদের মাঝে বালিশ বিতরণ করা হলো। ইতিপূর্বে প্রত্যেক বন্দি তিনটি কম্বল পেত। যার একটি বালিশ হিসেবে ব্যবহার হত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ বালিশ ও টেলিভিশন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি ওই কথা বলেন। এসময় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র সুপার সুব্রত কুমার বালা, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলার দেওয়ান মো. তারিকুল ইসলাম, কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের জেলার বিকাশ রায়হান সহ কারা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কারা মহাপরিদর্শক এদিন ওই অনুষ্ঠানে বন্দিদের জন্য কয়েকটি টিভি সেটও বিতরণ করেন।
কারা মহাপরিদর্শক আরো বলেন, শীঘ্রই কারাগারের বন্দিদের সকালের নাস্তা পরিবর্তন করা হচ্ছে। আগের রুটির সঙ্গে শুকনা গুড়ের টুকরা দেয়ার পরিবর্তে সবজি, হালুয়া এবং খিচুরীসহ সপ্তাহের একেকদিন একেক আইটেম নাস্তা সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে বন্দিদের নাস্তার ব্যয় হিসেব করে আর্থিক অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করি এর অনুমোদন ও বাস্তবায়ন অতি শীঘ্রই হবে।
তিনি আরো বলেন, এ যাবত বৃটিশ সময়কার আইন-কানুন অনুয়ায়ী আমাদের দেশের কারাগারগুলো পরিচালিত হচ্ছে। কারাগারগুলোকে সংশোধনাগার হিসেবে পরিচালিত করতে আরো কিছু বিষয় অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। এজন্য নীতিমালা ও আইনের কিছু পরিবর্তন করা প্রয়োজন। সে আইন পরিবর্তিত হচ্ছে। সেটার জন্য ইতিমধ্যে খসড়া নীতিমালা ও আইন লেখা হয়ে গেছে। সেটা পার্লামেন্ট থেকে অনুমোদন পেলেই আমরা তা বাস্তবায়ন করতে পারব।
আইজি প্রিজন আরো বলেন, পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে ১৫ দিন অন্তর কারাবন্দিরা টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ পাবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। দেশে ৬৮টি কারাগারে বুথ স্থাপনের কাজ শেষ হলেই কারাবন্দিরা সে সুযোগ পাবেন। এছাড়া কারাবন্দিদের তৈরি করা পণ্য ও দ্রব্য বিক্রি করে যে লভ্যাংশ পাওয়া যায়, তার অর্ধেক অর্থও পারিশ্রমিক হিসেবে বন্দিদের দেয়া হবে। তিনি এর আগে বন্দিদের সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন এবং কারাগার পরিদর্শন করেন।
বন্দিদের চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি বলেন, বন্দিদের চিকিৎসার ব্যাপারে আমরা কার্যত ব্যর্থই বলা চলে। এই মূহুর্তে দেশের ৬৮টি কারাগারে মাত্র ৮জন চিকিৎসক রয়েছেন। আর মাত্র ১১টা অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। কারাগারের বন্দিদের পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থাটাকে উন্নতি করতে হবে। তিনি বলেন, মাদকের মামলায় আটক মাদকাসক্ত বন্দিদের চিকিৎসার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চিকিৎসক লাগবে।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, এসব কারাগারে প্রাথমিকভাবে মোট ১৬ হাজার ৪’শ বালিশ বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিটি কভারযুক্ত বালিশের মূল্য পড়েছে ৪৮৬ টাকা। কাশিমপুরের চারটি, নেত্রকোণা জেলা কারাগার এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এ বালিশ বিতরণ কর্মসূচী উদ্বোধন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের ৬৮টি কারাগারের প্রতিটিতে প্রায় ৯৫ হাজার বন্দিকে বালিশ প্রদান করা হবে।
তিনি এর আগে তিনি ডেপুটি জেলার বুনিয়াদি প্রশিক্ষন কোর্সের প্রশিক্ষানার্থীদের সাথে কথা বলেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন