নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত জাতীয় পার্টি নেতা আল জয়নালের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানার একজন এএসআইকে গুলি করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় জয়নালকে আটক করা হয়েছে।
সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জয়নালের বিরুদ্ধে জেলায় জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতা, জমি দখলসহ গুরুতর অভিযোগে মামলা আছে। মূলত অভিযোগ থেকে বাঁচতেই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদ বাগিয়ে নেন। ওই সদস্যপদ পাওয়ার পর থেকেই তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন বলে জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, সোমবার রাতে আল জয়নাল সদর থানায় এসে ডিউটি অফিসার এএসআই আনোয়ারকে লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত যে থানার ডিউটি অফিসারকে হত্যা করতেই এ কাজটি করেছেন জয়নাল।
তিনি আরো জানান, তিনি অস্ত্র জমা দিতে এসেছিলেন। তার অস্ত্র গুলি ছোঁড়ার পর লোডেড অবস্থায় পাওয়া গেছে। কেউ অস্ত্র জমা দিতে গেলে গুলি লোডেড অবস্থায় কেন আসবে?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩০ মে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন আল জয়নাল।
প্রসঙ্গত, জয়নালের বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য মামলা ও অভিযোগ। ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে প্রথমবারের মতো মামলা হয়। মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ২০০৯ এর ৬(২)/১০/১৩ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, গোপন ষড়যন্ত্র, অপরাধ সংঘটনে পরস্পর সহযোগিতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে প্ররোচিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামিরা পরস্পরে প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনকে অস্থিতিশীল ও এই জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়। আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বিরুদ্ধে গোপন সন্ত্রাসের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র করে আসছিলেন। তাদের বিভিন্ন সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডে পৃষ্ঠপোষকতা ও আর্থিক সহায়তাকরী হিসেবে খবিরউদ্দিন, জয়নাল, আলমাস ও ইব্রাহিমসহ অনেকেই সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় কাতার প্রবাসীর স্ত্রীর জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে আল জয়নালের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দখলকৃত জমি থেকে কাতার প্রবাসীর স্ত্রী সুরাইয়া বেগমকে উচ্ছেদ করতে নানা ধরনের হুমকি দেয়ার কারণে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। ১০ অক্টোবর দুপুরে ফতুল্লার হরিহরপাড়া গুলশান রোড এলাকার আব্দুল ওহাবের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম বাদী হয়ে আল জয়নালের বিরুদ্ধে জিডি করেন।
ফতুল্লায় জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে আম মোক্তার নামা দলিল করে জমি দখলের অভিযোগে আল জয়নালসহ তার অনুগামী ৬ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলায় ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। উপেন্দ্র চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে মামলা করলে গত ৪ এপ্র্রিল জেলা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিবাদী আল জয়নালসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
বিডি প্রতিদিন/কালাম