রাজধানীর ডেমরায় নিহত দুই শিশু নুসরাত জাহান (৪) ও ফারিয়া আক্তার দোলাকে (৫) হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে দুই আসামি। আজ ঢাকা মহানগর হাকিম জসিম উদ্দিন আসামিদের জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আসামিরা হলেন- গোলাম মোস্তফা (২৮) ও আজিজুল (৩০)।
এরআগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডেমরা থানার উপ-পরিদর্শক শাহ আলম আসামিদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।
এরআগে মঙ্গলবার যাত্রাবাড়ীর ভাঙা প্রেস ও ডেমরার মোল্লাব্রিজ এলাকা থেকে আসামি গোলাম মোস্তফা (৩১) ও তার ফুপাতো ভাই আসামি আজিজুল বাওয়ানীকে (৩২) গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে বুধবার সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে সংবাদ সম্মলন করে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
নিহত নুসরাত জাহান (৪) ও ফারিয়া আক্তার দোলা (৫) স্থানীয় একটি নার্সারি স্কুলে পড়ত। ডেমরার কোনাপাড়ায় শাহজালাল রোডে পাশাপাশি দুটি বাসায় থাকত তারা। সোমবার দুপুরে বাড়ির সামনে খেলার মধ্যেই নিখোঁজ হয় দুই শিশু। তাদের খোঁজ না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিংও করা হয়। এরপর রাতে স্থানীয় আবুলের বাড়ির নিচতলায় মোস্তফার বাসার খাটের নিচ থেকে মেয়ে দুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মোস্তফাকে বাসায় না পেলেও তার স্ত্রী আঁখি ও শ্যালককে আটক করে পুলিশ। পরে তদন্তে নেমে মোস্তফা ও আজিজুলকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে জিজ্ঞাসাবাদে আসমিরা জানান, ধর্ষণ করার উদ্দেশ্যে তারা নুসরাত আর দোলাকে সোমবার দুপুরে বাসায় নিয়ে যায়। ঘটনার সময় মোস্তফার স্ত্রী গার্মেন্ট কর্মী আঁখি ছিলেন কারখানায়। মোস্তফা ও আজিজুল তখন বাড়ির বাইরে খেলতে থাকা নুসরাত আর দোলাকে ‘লিপস্টিক কিনে দেওয়ার প্রলোভন’ দেখিয়ে বাসায় নিয়ে যায়। পরে দুজন ইয়াবা সেবন করে জোরে গান বাজিয়ে মেয়ে দুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে ব্যার্থ হয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাদের হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছে। হত্যার পর দুই শিশুর লাশ খাটের নিচে রেখে দেয় মোস্তফা ও আজিজুল। পরে আজিজুল ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যান, মোস্তফা তখনও ছিলেন। সন্ধ্যায় আঁখি বাসায় ফিরে স্বামীর ‘অস্বাভাবিক আচরণ’ দেখে সন্দিহান হয়ে ওঠেন। আঁখি প্রতিবেশীর বাসায় গেলে ওই ফাঁকে মোস্তফা বাসা থেকে বেরিয়ে যান। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশ ওই বাসার খাটের নিচ থেকে মেয়ে দুটির লাশ থেকে উদ্ধার করে। এ ছাড়া হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত গামছা এবং আরও কিছু আলামত সে সময় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ডেময়া থানায় একটি মামলা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার