গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতে পাচারের অভিযোগে বেনাপোল ইমিগ্রেশনের সাবেক কনস্টেবল দেব প্রসাদ সাহা নামে এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ঢাকার কর্মস্থল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দেব প্রসাদ সাহা ঢাকার উত্তরা ১ নম্বর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে কনস্টেবল পদে কর্মরত আছেন। তিনি খুলনার তেরখাদা উপজেলা সদরের সুরেন্দ্রনাথ সাহার ছেলে।
এর আগে, গত রবিবার বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান বাদী হয়ে দেব প্রসাদ সাহার বিরুদ্ধে বেনাপোল পোর্ট থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার সকালে দেব প্রসাদ সাহাকে যশোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। বিচারক সাইফুদ্দিন হুসাইন কাল বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার আসামি দেব প্রসাদ সাহা ঢাকার উত্তরা ১ নম্বর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে কনস্টেবল। সেই সুবাদে ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কর্মরত ছিলেন। তার বিপি নম্বর- ৭৫৯৮০৫১১৯৮ ও কনস্টেবল নম্বর- ৭০৩। সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় ভারতের অনেকের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। যে কারণে তিনি যখন-তখন নোম্যানস ল্যান্ড অতিক্রম ভারতে যাওয়া-আসা করতেন। ইমিগ্রেশনে দায়িত্ব পালনকালে এমন দু'জন বাংলাদেশির সাথে তার পরিচয় ও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে, যারা বেনাপোলে মাঝে মধ্যে এসে ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টু নামে দু’জনের কাছে বাংলাদেশের গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করতেন।
২০১৮ সালের শেষের দিকে দেব প্রসাদ সাহা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত একটি পেনড্রাইভ নোম্যানস ল্যান্ড পার হয়ে ভারতে পাচার করে। ১৫ দিন পর আবারও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত পেনড্রাইভ ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টুর কাছে হস্তান্তর করে দেব প্রসাদ সাহা।
এরপর গত ২৫ অক্টোবর ঢাকার কমলাপুরের একটি হোটেল থেকে ডিজিএফআই ও র্যাবের হাতে আটক হন প্রসাদ সাহার সঙ্গে বন্ধুত্ব করা সেই দুই বাংলাদেশির মধ্যে একজন। এ সময় তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পেনড্রাইভ উদ্ধার হয় এবং ভারতের কাছ তথ্য পাচারের বেশ কিছু তথ্য দেন। পরে বিষয়টি পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে অনুসন্ধানে নামে। তদন্তে তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ভারতের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আরেফের সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিও সিডির মাধ্যমে ভারতে বাংলাদেশের তথ্য পাচারের বিষয়টি উঠে আসে।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব