পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফ-এর সভাপতি ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ বলেছেন, নারীরা বিদেশে যাবে কিন্তু গৃহকর্মী হবে না। আমাদের নীতি হওয়া উচিত, দেশ থেকে কোনো নারী গৃহকর্মী হয়ে বিদেশ যাবে না। নারী শ্রমিকদের বিদেশে পাঠাতে হলে দক্ষ প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠাতে হবে, তাহলে তারা যেখানেই যাক মর্যাদা পাবে। কিন্তু এ খাতে দালালদের দৌরাত্ম খুব বেশি। তারা নানা প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের বিদেশে পাঠায়। তাদের মাধ্যমে অদক্ষ শ্রমিকদের বিদেশে পাঠানো হয় বলেই তারা আজ নানামুখী নির্যাতনের শিকার। তাই দালাল নির্মূলে সরকারের নজর দেয়া উচিত।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বুধবার ‘কর্মজীবী নারী’ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিক: আইন ও বাস্তবায়ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০১৯ উপলক্ষে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কর্মজীবী নারীর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া রফিক। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিরীন আখতার এমপি, বিএমইটি’র পরিচালক মো. নূরুল ইসলাম, ওয়ারবি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি সৈয়দ সাইফুল হক, আইনজীবী ড. উত্তম কুমার দাস, ডেভকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান ইমাম, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সারওয়াত বিনতে ইসলাম। সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ‘কর্মজীবী নারী’র রাহেলা রাব্বানী।
খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, আইনে যাই থাকুক না কেন, সংবিধান অনুযায়ী মানুষকে সর্বোচ্চ সম্মান দিতে হবে। সব মানুষ সমান, সবাই মর্যাদার সহিত বাস করবো। কারও ক্ষতি করার অধিকার আমার নেই। দক্ষ শ্রমিক হলে দেশ এবং দেশের বাইরে মর্যাদা পাবে। তাই বিদেশে অদক্ষ শ্রমিক পাঠানো উচিত নয়।
এখাতে দালালদের আধিপত্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখাতে দৌরাত্ম খুব বেশি। আমরা একবার পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন সরকারের জনশক্তি রফতানি ব্যুরোর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে এই চিত্রটা দেখেছি। আমরা সেবার মাত্র ২৭ জনকে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু পরে আর পারিনি, দালালরা এতো শক্তিশালী। আমাদের এতো শক্তি থাকার পরেও আর পাঠানো সম্ভব হয়নি। এসময় তিনি সরকারের প্রতি এখাতের ধান্ধাবাজ ও দালাল লোকদের নির্মূল করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, দালালদের যদি নির্মূল করতে না পারি, তাহলে অভিবাসী শ্রমিকের সমস্যার সমাধান হবে না। তারা বিদেশে গিয়ে বিপদেই পড়বে। অনেক শিক্ষিত লোকও দালালদের খপ্পরে পড়ে। তাই চিহ্নিত দালালদের আইনের আওতায় আনা গেলে বাকিরা হুঁশিয়ার হবে।
এমপি-মন্ত্রীরা যদি বিনা পয়সায় ওষুধ পেতে পারি, শ্রমিকরাও পেতে পারে।
কর্মজীবী নারীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শিরীন আখতার এমপি বলেছেন, আমরা যারা সংসদ সদস্য বিনা পয়সায় চিকিৎসা পেলে, তারা কেন পাবে না? আমরা এমপি-মন্ত্রীরা যদি বিনা পয়সায় ওষুধ পেতে পারি, তাহলে এই শ্রমিকরাও তো কিছু পেতে পারে। যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে, তাদের জন্য সরকার এবং মানবাধিকার সংগঠনকে এই শ্রমিক গোষ্ঠীর ওপর নজর দেয়া দরকার। এসময় যে এলাকার শ্রমিকেরা বিদেশে আছে, তাদের আলাদা আইডি কার্ড করে কিছু সুবিধা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম