রাজধানীর উত্তরার একটি ফাস্টফুডে অভিযান চালিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দার দল। এতে প্রাথমিকভাবে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। একজন ক্রেতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালিত হয়।
সোমবার ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে একটি দল উত্তরার সোনারগাঁও জনপথ রোডের ৭ নম্বর সেক্টরের ৫৯ নম্বর প্লটে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালানো হয়।
গোয়েন্দার দল অভিযানে দেখতে পান, প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে উত্তরার ভ্যাট কার্যালয়ে কম ভ্যাট পরিশোধ করেছে। গোয়েন্দা দল ফাস্ট ফুডের প্রাঙ্গন থেকে তাদের বাণিজ্যিক দলিলাদি ও কম্পিউটারের তথ্য জব্দ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি চিকেন ফ্রাই, বার্গার, গ্রিল ও অন্যান্য ফাস্টফুড বিক্রি করে করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্রেতা মি. মানিক ফুডের খাবার খেয়ে বিল দিতে গিয়ে কাউন্টারে ভ্যাটের চালান চান। কিন্তু উত্তরার স্টোরটি তা না দিলে ওই ক্রেতা ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগ অনুসন্ধান করে গোয়েন্দারা দেখতে পান, গত ১৮ ডিসেম্বরে ৫৭ নম্বর টোকেনে উত্তরার স্টোরটি খাবার ক্রয়ের রিসিপ্ট দিলেও এতে ১৩ ডিজিট মূসক নম্বরের উল্লেখ নেই; ভ্যাট আইন অনুযায়ী মূসক ৬.৩ চালান নয়।
ভ্যাট গোয়েন্দারা বলছে, আজ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সময় স্টোরটি ব্যস্ত দেখতে পায়। তারা দলিলাদি যাচাই করে ফাস্ট ফুডের ভ্যাট চালানের রেকর্ডে বিক্রয়টি পায়নি। এতে প্রতীয়মান হয়েছে, ফাস্টফুড কর্তৃপক্ষ ভ্যাট ফাঁকি দিতে ডুপ্লিকেট হিসাব সংরক্ষণ করে।
জব্দকৃত কাগজে আরও দেখা যায়, গত ৬ মাসে উত্তরার শাখা হতে গড়ে এক লাখ টাকার বিক্রয় দেখানো হয়েছে। তবে গোয়েন্দারা দেখেন মি. মানিক ফাস্ট ফুড ফুডপান্ডা, সহজ ও অন্যান্য অনলাইনের মাধ্যমে তাদের খাবার হোম ডেলিভারিও করে আসছে।
গোয়েন্দারা ফুডপান্ডা ও সহজ এর সিস্টেম থেকে যাচাই করে দেখতে পান, ৬ মাসে প্রতিষ্ঠানটি কেবল অনলাইনে গড়ে প্রায় ৫ লাখ টাকার খাবার সরবরাহ করেছে।
গোয়েন্দাদের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মানিক ফুডসের প্রাঙ্গনে বসে ক্রেতারা আরো বেশি হারে খাবার কিনে থাকে। ভ্যাট গোয়েন্দারা জব্দকৃত দলিলাদি আরও যাচাই করে মোট ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ নির্ণয় করছে।
দৈনিক বিক্রয়ের লেনেদেনের তথ্যের জন্য ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। ভ্যাট আইন লঙ্ঘনের কারণে মানিক ফুডসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে ভ্যাট গোয়েন্দা।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত