জন্মান্ধ বাবা ও দুই ছেলে। বাবা আব্দুল কাদের শেখ (৬০) মায়ের পেট থেকেই জন্ম নিয়েছেন অন্ধ হয়ে। তিনি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার নরসিংদহ গ্রামের আব্দুল ময়নুদ্দিন শেখের ছেলে।
জন্মান্ধ হওয়ায় ছোট বেলা থেকে আত্মীয়-স্বজনের অনাদর-অবহেলায় বড় হন। সংসারে স্বচ্ছলতা কখনোই ছিল না। যৌবনে এসে বিয়ে করেন আব্দুল কাদের।
কিন্তু কপালের লিখন যায় না খণ্ডন। পর পর দুটি ছেলে সন্তানই জন্ম নেয় অন্ধ হয়ে। সন্তানদের ঘিরে সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। বড় ছেলে সায়েদুল শেখ ও ছোট ছেলে মাসুম শেখ অন্ধ হওয়ায় তারা স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারে না।
একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে রাস্তায় ভিক্ষা করতে নেমে পড়েন তারা। ভিক্ষা করেই চলে তাদের সংসার। এ অবস্থা চলছে দুই যুগের বেশি সময় ধরে। বড় ছেলে সায়েদুলের বর্তমান বয়স (৩৫) ও মাসুমের বয়স (৩১)। তারা দুজনেই বিয়ে করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর নগরীর জিএলরায় রোডে হ্যান্ডমাইকে গজলের সুরে সুরে যখন ভিক্ষা করছিলেন, তখন কথা হয় তাদের সাথে।
আব্দুল কাদের দুঃখ করে জানান, আমাদের বাপ-বেটাদের কপাল মন্দ। তা না হলে তিনজনই আমরা জন্মান্ধ হলাম কেন!
তিনি জানান, সপ্তাহে ৩ দিন ভিক্ষা করতে বের হন। প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ৭০০ টাকা আয় হয়। এদিয়ে তাদের সংসার চলে যায়।
একপর্যায়ে আব্দুল কাদের কৌতুহল হয়ে জিজ্ঞাসা করেন, আমাদের নিয়ে লিখবেন নাকি? লিখে কি হবে! কেউ কি আমাদের মতো হতভাগা বাপ-বেটার পাশে দাঁড়াবে। ভিক্ষার এ জীবনের কি কোনদিন অবসান হবে!
বিডি প্রতিদিন/এমআই