ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) উপমহাব্যবস্থাপক ও রাজশাহীর শাখা প্রধান আব্দুল মোত্তালিবকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রবিবার আইসিবির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামাল হোসেন গাজী এক অফিস আদেশে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।
আইসিবির সাময়িক বরখাস্ত হওয়া উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সম্প্রতি অর্জিত ছুটি (ইএল) নিয়ে জেলে গিয়েছিলেন। দুর্নীতির মামলায় তিনি জেলে গেলেও গোপন রেখেছিলেন বিষয়টি। ১ জানুয়ারি এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ প্রতিদিন।
সাময়িক বরখাস্তের আদেশের কপিতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি শুধু খোরাকী ভাতা পাবেন। আদেশে আব্দুল মোত্তালিবকে প্রধান আইসিবির কার্যালয়ের ডিসিপ্লিন, প্রিভেন্স ও আপিল বিভাগে অবিলম্বে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কানোপাড়া সাজুরিয়া গ্রামের মৎসচাষী আব্দুল বারিক মণ্ডলের নামে ২০১১ সালে আইসিবি থেকে ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছিল। তবে নথিপত্র জাল করে প্রথম কিস্তির ২৭ লাখ টাকা তুলে নেন রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার মঙ্গলপাড়া গোবিন্দপাড়া গ্রামের গোলাম মোর্শেদ হক। এ কাজে সহায়তার অভিযোগ ওঠে রাজশাহী শাখা প্রধান আব্দুল মোত্তালিব ও প্রধান কার্যালয়ের এজিএম আহম্মদ হোসেনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে তিনজনের নামে মামলা করেন বারিক।
মামলাটি তদন্ত করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাশেদুল ইসলাম। তিনি ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দেন। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পলাতক থাকেন মোত্তালিব। অবশেষে মামলার নির্ধারিত দিন গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি রাজশাহী বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। ২৮ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত তাকে ছয় মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন দেন।
৩০ সেপ্টেম্বর তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হন। আব্দুল মোত্তালিব যেদিন কারাগারে যান, সেদিনও তিনি হাজিরা খাতায় সই করেছেন। দিনটি ছিল ১৬ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার। পরের দুই দিন শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি। আব্দুল মোত্তালিব রবিবার অর্থাৎ ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ দিনের অর্জিত ছুটির আবেদন দেন। ১৪ সেপ্টেম্বর এ আবেদন দেন তিনি।
ছুটির আবেদনে পৈত্রিক জমিজমা ভাগ-বাটোয়ারা, খাজনা পরিশোধ এবং সীমানা প্রচীর নির্মাণসহ পারিবারিক কাজে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। গ্রামে না গিয়ে তিনি আদালতের মাধ্যমে গিয়েছিলে কারাগারে। মোত্তালিব যেদিন জেলে যান, সেদিন থেকেই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে জেল থেকে বের হওয়ার পর তিনি দিব্যি অফিস করছিলেন। জেলে যাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গোপন রেখেছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন