রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মিঠিপুর ইউনিয়নের পানবাজার ভাগযোয়ার গ্রামের গাছিরা তিন দশকের বেশি সময় ধরে খেজুরের গুড় তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতি বছর শীত মৌসুমের আগে থেকেই মাঠে নেমে পড়ে তারা। আশপাশের খেজুর গাছ প্রস্তুত করে রস সংগ্রহের জন্য। বেশিরভাগ গাছি গাছ মালিকের সাথে বছরভিক্তিক চুক্তিতে রস সংগ্রহ করে থাকেন।
প্রত্যেক গাছিই এক থেকে দেড়’শ খেজুর গাছ তৈরি করে নেয় প্রতিবছর। প্রতিটি গাছ থেকে যে পরিমাণ রস হয় তা দিয়ে গুড় তৈরি করে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় হয় তাদের। গাছিদের অনেকে ফেরি করে গুড় বিক্রি করেন। আবার ব্যবসায়ীরাও গাছিদের কাছ থেকে গুড় কিনে নিয়ে যান। সুস্বাদু এই খেজুরের রস থেকে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও ঝোলা গুড়।
ভাগযোয়ার গ্রামের ফজলু মিয়া বলেন, তাদের এলাকায় প্রতিবছর গুড় তৈরি করে খেজুর গাছ মালিকরাও লাভবান হয়েছে সেই সাথে গাছিদের কয়েকটি পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। গাছি মুকুল মিয়া বলেন, সকালে আমরা কয়েকটি গ্রামের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে নিয়ে আসি। রস সংগ্রহ শেষে হাঁড়িতে ভরে জ্বাল দেয়া হয়। এক সময় গুড় তৈরি হলে তা গরম অবস্থায় টিনের পাত্রে ঢেলে নিয়ে বিভিন্ন সাইজের গুড় তৈরি করে নেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, তার খেজুর গুড় তৈরি করতে ৭ জন শ্রমিক কাজ করছেন।
গাছিরা জানায়, এ বছর গাছ থেকে রস অনেকটাই কম পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম ভালো থাকায় তারা গুড় তৈরি ব্যবসায় তারা খুশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, পীরগঞ্জে কিছু এলাকার কৃষক আবাদি জমির আইলে ও রাস্তার দু’পাশে খেজুর গাছের লাগিয়েছেন। এসব জমিতে ও চাষিদের বাড়ির আশপাশে ও কৃষি জমিতে খেজুরের গাছের পাশাপাশি অন্যান্য ফসলের চাষও হচ্ছে।
মিঠিপুর ইউনিয়নের কেশবপুর, ভাগজোয়ার, পাহাড়পুর, একতারবাজার, পাছগাছি সাহাপুর, ইউনিয়নের, আমোদপুর, এনায়েতপুর, দশমৌজা, পানেয়া গ্রামের কৃষকরা চুক্তিতে প্রতি খেজুরের রসের গুড় বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর