মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এর সহযোগিতায় এটুআই-ইনোভেট ফর অল এর উদ্যোগে ‘উদ্ভাবনী বাংলাদেশ: আমার গ্রাম আমার শহর ও তারুণ্যের শক্তি’ বিষয়ক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) মিলনায়তনে আয়োজিত কর্মশালার দ্বিতীয় অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো: আবুল কালাম আজাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এন এম জিয়াউল আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব জুয়েনা আজিজ, এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আন্তর্জাতিক কৃষি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ এবং ন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব স্মল এ্যান্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ (এনএএসসিআইবি) এর সভাপতি মির্জা নুরুল গনি শোভন (সিআইপি)। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এটুআই এর পলিসি এডভাইজার আনীর চৌধুরী।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে দেশের প্রতিটি গ্রামে শহরের সকল নাগরিক সেবা ও সুবিধা পৌঁছে দেয়া হবে। তিনি বলেন, নাগরিক সেবা পৌঁছে দিতে দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রদান করে তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত করে দক্ষ জনসম্পদে পরিণত করা হবে। আমাদের সৃজনশীল জনগোষ্ঠি রয়েছে, তাদেরকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার প্রাথমিক স্তর থেকেই শুরু করার উপর গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী। তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের মধ্যে দেশের সকল ইউনিয়ন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় আসবে। তিনি আরো বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশের ৫৪৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে ওয়াইফাই সংযোগ প্রদান করা হবে।
মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রাইভেট সেক্টরকে সাথে নিয়ে উদ্যোক্তা তৈরির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রামে শহরের নাগরিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। এই সম্ভাবনা বাস্তবায়নে সরকারি-বেসরকারি যৌথ পদক্ষেপের উপর গুরুত্বারোপ করেন এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক। এন এম জিয়াউল আলম বলেন, পেপারলেস না হলেও ইতোমধ্যে সফলভাবে লেস (কম) পেপার ব্যবহার করে সরকারি সেবা প্রদান সম্পন্ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের সফলতা হচ্ছে প্রতিটি সরকারি অফিসেই এখন ই-নথি চালু হয়েছে।
শাইখ সিরাজ বলেন, প্রযুক্তির দেশে কৃষিকে এগিয়ে নেয়ার মতো যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। জমির মালিকানা অনুযায়ী আবাসনকে ক্লাস্টারে আনার বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির কারণে কৃষকদের পিছিয়ে পড়ার বিষয়টিকে মাথায় রেখে তাদের জন্য টেকসই উন্নয়ন ব্যবস্থা তৈরি করা প্রয়োজন।
মির্জা নুরুল গনি শোভন (সিআইপি) বলেন, প্রাইভেট সেক্টরকে সাথে নিয়ে কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি তৈরি করা যেতে পারে। এছাড়া একটি বাড়ি একটি শিল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আত্ম-কর্মসংস্থান তৈরি করার সুযোগ রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি সেক্টর একত্রে কাজ করে উদ্যোক্তা ও এপ্রেনটিচশীপ প্রোগ্রামকে আরো জোরদার করতে হবে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রামে ঘরে বসে আয় করার সুযোগ তৈরি করে বেকারদেরকে কর্মযজ্ঞে নিয়ে আসা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ইউএনডিপি এবং ইউএসএইড এর সহায়তায় এটুআই ২০৪১ সালের মধ্যে উদ্ভাবনী বাংলাদেশ গড়ে তোলার ভিশন অর্জন কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রথম অধিবেশনে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেক্টরের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ২০২৩ সালের মধ্যে ‘আমার গ্রাম - আমার শহর ও তারুণ্যের শক্তি’ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করার প্রাথমিক রূপরেখার খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। রূপরেখার আলোকে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান, পরিবহন, প্রযুক্তি সংযোগ, ই-কমার্স ও প্রাইভেট সার্ভিস, পেপারলেস অফিস ও সরকারি সেবা এবং জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকমুক্ত সমাজ বিষয়ে ভবিষ্যত সম্ভাবনা ও করণীয় সচিত্র উপস্থাপন করা হয়।
দ্বিতীয় অধিবেশনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের টিওটি প্রাপ্ত এসডিজি ফোকাল পার্সন সহ বিভাগ, অধিদপ্তর, দপ্তর এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল