সিলেটের ৩৮ বছর বয়সী নাজার বেগমের গলার খাদ্যনালির ক্যান্সার (Esophegus Cancer) নির্ণীত হয় ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। শুরুতে তিনি ডা. বিশ্বজিত ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে কেমো রেডিয়েশন গ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে স্বনামধন্য, অ্যাডভান্সড ল্যাপারোস্কপিক সার্জারির অগ্রদূত- অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ ফরিদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করেন। ডা. মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন ল্যাপারোস্কপির- এর মাধ্যমে (পেট না কেটে ছিদ্রের মাধ্যমে) প্রথমে পেটে ক্যান্সার-এর বিস্তৃতি পরীক্ষা করেন, এরপর লিভারের সন্দেহজনক কিছুটা অংশ কেটে হিস্ট্রোপ্যাথোলজি ল্যাব-এ পাঠিয়ে দেন। ক্যান্সার ছড়িয়ে না যাত্তয়ার হিস্ট্রোপ্যাথোলজি ফলাফল পাওয়ার পর পুরো পাকস্থলি এবং গলার খাদ্যনালির নীচের অর্ধেকের বেশি অংশ পুরোপুরি মোবালাইজ (Stomach Esophegus কে তার অবস্থান থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া) করেন। এরপর ক্যানসারে আক্রান্ত অংশ কেটে ফেলে দিয়ে খাদ্যথলির বাকি অংশটুকু দিয়ে টিউবের মতো করে নতুন খাদ্যনালি এবং খাদ্যথলি তৈরি করে তা বুকের মধ্যে দিয়ে গলার দিকে টেনে নিয়ে এসে গলার মাঝামাঝি অংশের মূল খাদ্যনালির (Esophegus) সাথে জুড়ে দেন। রোগী বড় কোনো রকম জটিলতা ছাড়াই আল্লাহর মেহেরবানিতে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান।
গলার খাদ্যনালির ক্যান্সার অন্যান্য ক্যান্সারের তুলনায় অত্যন্ত ভয়াবহ। এই রোগের সার্জারির ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ই পেটের সাথে বুকও কাটতে হয়, যা রোগীর জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং রোগীদের সার্জারির পরবর্তী অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। এমনকি অনেকে মারাও যান। ল্যাপারোস্কপির সহায়তায় খাদ্যনালি, খাদ্যথলি এবং পরিপাক নালির বিভিন্ন অংশ অতিসহজেই বড় কোনো জটিলতা ছাড়াই সম্পন্ন করা যায়। আমাদের দেশে সর্বপ্রথম ডা. মোহাম্মদ ফরিদ হোসেনই ল্যাপারোস্কপির সহায়তায় এই ধরনের অ্যাডভান্সড ল্যাপারোস্কপিক সার্জারি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করছেন। তিনি কিছুদিন পূর্বেও ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে খাদ্যথলি ক্যান্সারের (Stomach Cancer) সফল সার্জারি করেন। বিদেশের তুলনায় এ্যাপোলো হসপিটাল্স ঢাকায় এই ধরনের অ্যাডভান্সড ল্যাপারোস্কপিক সার্জারির খরচ কম করেও ৩/৪ গুণ কম।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার