স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় এসে থাকছেন মাইমুনা আক্তার। ভেবেছিলেন নিজের মত করে সংসার সাজাবেন। কিন্তু করোনার কারণে বাইরে যাতায়াত বন্ধ। তাই কেনা হয়নি খাট ও সোফার মত প্রয়োজনীয় কোন আসবাব। অবস্থা এতই শোচনীয় যে শীতের রাতেও ঘুমাতে হচ্ছে মেঝেতে। অতিথি এলে বসাতে হচ্ছে বাড়ি থেকে আনা বেতের মোড়ায়। এই অবস্থা দেখে পাশের বাড়ির তানিয়া ভাবি হদিস দিলেন দেশের নামকরা ফার্নিচার ব্রান্ড হাতিলের ভার্চুয়াল শোরুমের।
করোনাকালে যাতায়াত বন্ধ থাকা ও ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে দেশে প্রথমবারের মতো হাতিলই এই শোরুম চালু করেছে। এতে ঘরে বসে মোবাইল বা কম্পিউটারে শোরুমে প্রবেশ করে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দেখা যায় সব ফার্নিচার। শুধু দেশের নয় হাতিলের বিদেশি ক্রেতারাও এই সুবিধা পাচ্ছেন।
হাতিল অবশ্য ক্রেতাদের জন্য নিত্য নতুন সুবিধা নিয়ে আসার জন্য বেশ সমাদৃত। ১৯৮৯ সালে এই কোম্পানি যাত্রা শুরু করে আসবাবপত্রে মানুষকে এক ভিন্নধর্মী,সুদূরপ্রসারী এবং সেবামূলক অভিজ্ঞতা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে। আর এমন ভাবনা কাজে লাগিয়ে তারা ছাড়িয়ে যায় বাজারের অন্যান্য প্রতিযোগীদের। সাফল্যের পথ ধরে তারা ছড়িয়ে পড়েছে নানা দেশে। ভাষা ও দেশ আলাদা হলেও গোটা বিশ্বজুড়ে হাতিলের পণ্যের গুণগতমান অভিন্ন।
করোনাকালে ঘরে বসেই ফার্নিচার কেনাকাটার মত প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ফেলার জন্য হাতিল চালু করেছে "৩৬০ ডিগ্রি ভার্চুয়াল শোরুম"। এই শোরুমে শুধু ঘোরাঘুরি নয়, ঘরে বসে পছন্দের আসবাব কেনাও যায় এবং তা ঘরে ঠিকঠাক বসবে কি না, তা ইঞ্চি ধরে পরিমাপও করা যায়।
হয়তো তাদের দেখানো এ পথে অচিরেই হাঁটবে অনেকে। তবে আজীবন এমন যুগোপযোগী উদ্যোগের আবিষ্কারক হিসেবে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে কেবল হাতিলের নাম।
হাতিলের চার তলা এই ভার্চুয়াল শোরুমে দেখা যাবে লিভিং রুম ফার্নিচার, অফিস ফার্নিচারসহ হাতিলের সব আসবাব। সাথে অর্ডারও করা যাবে। চাইলে ঘরের সাথে মিলিয়ে কাস্টমাইজ করা সম্ভব। হাতিলের এই সব অভিনবত্বের কারণে সব সময় পছন্দ করেন ক্রেতারা। সেই পছন্দের গন্ডি এখন ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী।
দেশের বাইরে হাতিলের এখন ২২টি শোরুম রয়েছে। নতুন বছর আরও কয়েকটি শোরুম চালু হবে। রবার্ট পল ইন কর্পোরেশনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে তারা হাতিল ফার্নিচার বাজারজাতকরণ করছে।শুধু বাংলাদেশ নয় যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, মিশর, রাশিয়া, নেপাল, ভুটান এবং ভারতের মতো দেশেও হাতিল জায়গা করে নিয়েছে ক্রেতাদের মনে।
বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান হিসেবেই তারা ফার্নিচার রপ্তানি করছে দেশের বাইরে। ২০১৩ সালে হাতিল গ্রিন অপারেশন ক্যাটাগরিতে এইচএসবিসি-ডেইলি স্টার ক্লাইমেট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে।এ বছর তারা পেয়েছে সর্বোচ্চ ভ্যাট দাতা প্রতিষ্ঠানের সম্মান ও পুরস্কার।
হাতিলের ভার্চুয়াল শোরুম ঘুরে দেখে কয়েক ধরনের ফার্নিচার অর্ডার করেছেন মাইমুনা।কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ঘর সাজিয়ে প্রথম দাওয়াতটা তানিয়া ভাবিকেই দিবেন বলে মনস্থির করেছেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর