প্যান্ডেল সাজানো, রান্নাবান্নাসহ বিয়ের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। বাড়ি ভর্তি মেহমান। শুধু বরযাত্রী ও কাজী আসার অপেক্ষা। এরই মধ্যে বাগড়া হলেন ইউএনও লিংকন বিশ্বাস। পণ্ড হয়ে গেলো সবকিছু। তারই হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ের হাত থেকে রক্ষা পেল এসএসসি পরীক্ষার্থী মনজিলা আক্তার (১৬)।
বুধবার দুপুরে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের রাজৈর গ্রামে জামাল ফরাজীর বাড়িতে চলছিলো বাল্যবিয়ের এমন আয়োজন। বর পাশ্ববর্তী নলবুনিয়া গ্রামের কামাল মুন্সীর ছেলে সুমন মুন্সী (৩০)। সে রাজমিস্ত্রি’র কাজ করে। জোহরের নামাজের পর পরই শুরু হবে সেই শুভক্ষণ। এমন সময় খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস পুলিশ নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে বিয়ের সকল প্রস্তুতি বন্ধ করে দেন। এসয় মেয়ে বাবা জামাল ফরাজী গা ঢাকা দেন।
এর আগে খবর পেয়ে ওই বিয়ে বাড়িতে ছুঁটে যান ‘চ্যানেল আই’ পরিচালিত কিশোর-কিশোরী সুরক্ষা কমিটির স্বর্ণকিশোরী লামিয়া আক্তার মনা। তিনি অল্প বয়সে মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ার জন্য পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করেন।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস বলেন, গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ইমাম হোসেন নামে পাত্রীর এক ভাই আমার দপ্তরে এসে তার বোনের অমতে বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন। বুধবার দুপুরে গিয়ে বিয়ের সমস্ত আয়োজন বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিয়ের কাবিন হয়েছে কীনা তা তদন্ত করে জলিতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিশোর-কিশোরী সুরক্ষা কমিটির স্বর্ণকিশোরী লামিয়া আক্তার মনা বলেন, আমি খবর পেয়ে সকাল ১১টার দিকে ওই বাড়িতে যাই। মেয়ের সাথে কথা বলি মেয়ে এ বিয়েতে রাজি না বলে আমাকে জানালে পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তারা কিছুতেই আমার কথা শুনছিলোনা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য পুসিয়া বেগম ও আব্দুর রহিম হাওলাদার বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে ইউএনও স্যার বলার পরে আমার খোঁজখবর নিয়ে তখন বিয়ের কোনো আলামত পাইনি। হঠাৎ করে তারা এ আয়োজন করেছে। বিয়ের সব আয়োজন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন