ভুল চিকিৎসায় এক স্কুলশিক্ষিকার মৃত্যুর অভিযোগে করা মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডা. ডিউক চৌধুরীসহ ৩ চিকিৎসককে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ এবং তাদের মুক্তির দাবিসহ চিকিৎসকদের নিরাপত্তা প্রদানের দাবিতে জেলার সকল প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) ডাকে আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মুন্সফপাড়ার ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্টেনের স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা নওশিন আহম্মেদ দিয়া প্রসব বেদনা নিয়ে গত ৩০ অক্টোবর খ্রীস্টিয়ান মেমোারিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে সিজারিয়ানের মাধ্যমে তার একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। সুস্থ হওয়ার পূর্বেই তাকে ছাড়পত্র দেওয়ায় বাড়িতে চলে যায়। ফের ৪ নভেম্বর প্রচন্ড মাথা ব্যাথা নিয়ে খ্রীস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন। হাসপাতালের স্বত্ত্বাধিকারী ডা. ডিউক চৌধুরী ও চিকিৎসক অরুনেশ্বর পাল অভি এবং মো. শাহাদাত হোসেন রাসেল ভুল ইনজকশন এবং ঔষধ প্রয়োগে করার পর দিয়া অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হলেও মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে ওইদিন দুপুর একটায় তাকে ঢাকা নিয়ে যেতে বলা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে পৌঁছানোর পর সেখানকা চিকিৎসকরা কয়েক ঘণ্টা আগেই দিয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান।
ঘটনার ৮দিন পর কবর থেকে মরদেহ উত্তোলণ ও ডা. ডিউক, ডা. অভি ও ডা. রাসেলকে আসামি কারে মামলা দায়ের করে দিয়ার স্বজনরা। এরপর হাইকোর্ট থেকে তারা ৪ সপ্তাহের জামিনে আসে। ১৮ ডিসেম্বর তারা আদালতে উপস্থিত হলে আদালত ১ জানুয়ারী শুনানির দিন ধার্য করেন। ১ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টায় ডিউকসহ তার মালিকানাধীন হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ও মামলার আসামি অনুরেনশ্বর পাল অভি ও শাহাদাত হোসেন রাসেলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজম।
তিন চিকিৎসককে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় বিএমএ ও বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক মালিক সমিতির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় তিন চিকিৎসককে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে আজ শনিবার দিনব্যাপী সকল চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিএমএ’র ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আবু সাঈদ বলেন, চিকিৎসকরা জেলে গেলেতো নিরাপত্তহীনতার কারণে চিকিৎসা সেবাআ দিতে পারবে না। আমরা চাই চিকিৎসার বিষয়ে যদি কোনো সন্দেহ থাকে সেটা নিয়ে যেন অভিজ্ঞ কেউ মতামত দেন এবং তদন্ত হয়। তারপর মামলা হোক। ডা. ডিউকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত হয়নি। আজকের কর্মসূচি পালনের পর আলোচনা করে আমাদের আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করব।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ