কুড়িগ্রামে গত দুই সপ্তাহ যাবৎ ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদী অববাহিকার ছিন্নমূল হতদরিদ্র মানুষজন শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। অন্যদিকে, অতিরিক্ত কুয়াশায় চলতি বোরো মৌসুমের বীজতলা চারা গাছ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ৯ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ফলে সদ্য বেড়ে ওঠা বোরো বীজতলা ক্ষতির আশঙ্কা কৃষক ও কৃষি বিভাগের।
কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ১ লাখ ১২ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য ৬ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষকরা বোরো বীজতলা তৈরি করেছেন। তারমধ্যে হাইব্রিড জাতের ১ হাজার ৪৫ হেক্টর, উফসী জাতের ৩ হাজার ৮৬৬ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ১৯০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার অনেক বীজতলার চারাগাছ অতিরিক্ত ঠান্ডা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের কৃষক মজিবর রহমান জানান, এবারের শীতের প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে আমার জমির অর্ধেক বীজ গজায়নি।এছাড়াও যেসব চারা গজিয়ে উঠেছে সেগুলোর বোরো চারা গাছ শীতের কারণে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
রাজারহাট উপজেলার ফরকের হাট এলাকার কৃষক মনতাজ আলী বলেন, আমি প্রায় ২০ শতক জমিতে বোরো বীজ লাগাইছি। এর মধ্যে একটি বোরো বীজতলা পাতলা হয়ে গেছে। গজিয়ে উঠতে পারেনি শীতের কারণে। এখন চিন্তায় আছি নষ্ট হয়ে গেলে কীভাবে জমিতে রোপণ করব।
এদিকে, নদ-নদীবাহিত জেলা কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদী অববাহিকার বেশির ভাগ বীজতলা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও কৃষি বিভাগ এ ব্যাপারে কৃষকদের পরামর্শ দেয়ার কথা জানিয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, বোরো বীজতলা রক্ষায় কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই