‘কী দিন আল্লাহ আমারে দিল! গত পরশু (৭ এপ্রিল, সোমবার) রাতে ফোনে আমার সাথে কথা হয়েছে। যে কোনো মূল্যে স্বামীকে আমি ফেরত চাই। স্বামীকে আমি দেখতে চাই। আপনাদের কাছে আবেদন, আমার স্বামীকে দেশে পাঠাইয়া দেন। আমার সন্তানদের এখন কে দেখবে?’
সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী হাবিবুর রহমানের মৃত্যুর খবর পেয়ে এভাবেই বিলাপ করছিলেন তার স্ত্রী। বুধবার দুপুরে মৃতের বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী, সন্তান ও স্বজনদের আহাজারি দেখা যায়।
সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার শেখ হাবিবুর রহমান হাবি (৪২) নিহত হয়েছেন। তিনি ভাঙ্গার ঘারুয়া ইউনিয়নের ঘারুয়া গ্রামের মৃত সেকেন শেখের পুত্র। সেকেন শেখের চার ছেলের মধ্যে হাবিবুর রহমান তৃতীয় ছিলেন। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার মৃত্যুর খবর আসে। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন তিনি।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, হাবিবুর রহমান ১৪-১৫ বছর ধরে সৌদিতে কাজ করেন। মাঝে মাঝে ছুটিতে দেশে আসেন। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে (সৌদি আরবের সময় বিকাল ৩টা) সৌদিতে সড়ক ডিভাইডার (বিভাজন) এর কাজ করছিলেন তিনি। এ সময় দ্রুত গতির একটি মাইক্রোবাস তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। গত বছর একবার তিনি দেশে এসেছিলেন।
নিহত হাবিবুর রহমান শেখের শ্যালক আলাউদ্দিন শেখ (২৫) বলেন, ঘটনার ঘণ্টা দুই পরে আমরা খবর পাই যে, দুলাভাই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এরপর আমরা তার রুমমেটের সাথে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি আরও জানান, সড়ক ডিভাইডারের কাজ করতে গিয়ে কাজের শেষ পর্যায়ে সড়ক ডিভাইডার মাপ দিতে গিয়ে মাইক্রোবাসের চাপায় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। আমরা তার কপিলের (মালিক) সাথে যোগাযোগ করেছি। কপিল বলেছেন, লাশ পুলিশ নিয়ে গেছে। লাশ দেশে আনার ব্যাপারে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব।
ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, সৌদিতে মাইক্রোবাস চাপায় আমাদের হাবিবুর রহমান মারা গেছেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল