মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মুলজান এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠেছে একটি বিশাল ময়লার ভাগাড়। যেখানে প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে পৌর এলাকার হাসপাতালসহ বিভিন্ন উৎস থেকে আসা বর্জ্য। দুর্গন্ধে দিশেহারা স্থানীয় বাসিন্দারা। বারবার অভিযোগ করলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তিন ফসলি উর্বর কৃষি জমিতে এই ময়লার ভাগাড় গড়ে উঠেছে সম্পূর্ণভাবে অপরিকল্পিতভাবে। এলাকাবাসীর আন্দোলন-সংগ্রামও থামাতে পারেনি ময়লা ফেলা। এর ফলে পরিবেশের উপর তৈরি হয়েছে মারাত্মক চাপ। নির্ধারিত ডাম্পিং এলাকা না থাকায় রাস্তার পাশেও ময়লা ফেলা হচ্ছে, যা মানুষের স্বাভাবিক চলাচলেও বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।
মুলজান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ও মসজিদের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পাশে ময়লার স্তূপ থাকায় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী চরম ভোগান্তির শিকার। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জানায়, ময়লার গন্ধে প্রায়ই মাথা ঘোরে ও বমি আসে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা বলছেন, পচা দুর্গন্ধে জমিতে কাজ করা যায় না। মশা-মাছির উপদ্রবও বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে নাক-মুখে কাপড় গুঁজে কাজ করছেন।
মুলজান উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক খোন্দকার আক্কাছ আলী বলেন, “মুলজানের এই ডাম্পিংয়ের কারণে পুরো এলাকার পরিবেশ ধ্বংসের মুখে পড়েছে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে মানুষকে এলাকা ছাড়তে হবে।”
ভাটবাউর এলাকার আব্দুস সামাদ বলেন, “অন্য এলাকাগুলোতে দিন দিন জমির দাম বাড়লেও অপরিকল্পিত ময়লার ভাগাড়ের কারণে আমাদের জমির দাম কমে গেছে।”
পরিবেশ অধিদফতরের সিনিয়র কেমিস্ট এ কে এম ছামিউল আলম কুরসি বলেন, “খোলা জায়গায় ময়লা ফেলা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। মানিকগঞ্জ পৌরসভাকে দ্রুত পরিবেশবান্ধব ডাম্পিং ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানানো হয়েছে।”
পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জায়গা অধিগ্রহণ করে পরিবেশবান্ধব ডাম্পিং এলাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে ততদিনে এলাকার মানুষ ও পরিবেশ যে ক্ষতির মুখে পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম