রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেনের অভাবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিশুটির নাম রিমলি চাকমা, বয়স মাত্র এক মাস। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে জেলা দুর্গম ও সীমান্তবর্তী উপজেলা বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত শিশুটির বাবা রিটন চাকমা অভিযোগ করে বলেন, সকালে আমার সন্তানের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। রাঙামাটির বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটিও অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল না। কিন্তু নার্স ও চিকিৎসকরা বিকল্প উপায় অর্থাৎ শিশুর শরীরের উপর দু’হাত রেখে বারবার চাপ প্রয়োগ (সিপিআর) মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করার চেষ্টা করেছে। তবুও বাঁচানো গেল না আমার সন্তানকে। যথা সময় অক্সিজেন থাকলে হয়তো শিশু রিমলি এভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তো না।
তবে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবাশীষ।
শিশুটির বাবা আরও বলেন, একটা অ্যাম্বুলেন্সও ছিল না যে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাব। একটা নাকি অ্যাম্বুলেন্স আছে, তাও নষ্ট।
রাঙামাটি বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক অনুপম চাকমা বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের চাকা ও ব্যাটারি নষ্ট দীর্ঘদিন। তাই রোগী পরিবহন সেবা বন্ধ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ ঠিক না করলে আমার তো কিছু করার নেই।
এদিকে অক্সিজেনের অভাবে শিশুর মৃত্যু খবর ছড়িয়ে পড়লে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দেয় স্থানীয়দের মধ্যে। ঘটনাস্থলে যান বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরিন আক্তার। তিনি বলেন, শিশুটির বাবার অভিযোগ শুনেছি। একই সাথে হাসপাতালের অবস্থাও দেখলাম। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন সময়মতো অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা গেলে হয়তো শিশুটি বেঁচে যেতো। পুরো বাঘাইছড়ি মিলে একটি মাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, তাতে অক্সিজেন নেই। এটা আসলে ভাবার কথা।
তিনি বলেন, একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স, তাও আবার দীর্ঘদিন বন্ধ পড়ে আছে। ১৬ জন ডাক্তার থাকার কথা, আছেন মাত্র চারজন। আজকে আছেন একজন। এভাবে কী বৃহত্তর একটি উপজেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চলবে? ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বারবার জানানো হয়েছে এসব সংকটের কথা। কিন্তু তেমন কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে রাঙামাটির সিভিল সার্জন নূয়েন খীসা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। শিশুটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। যখন হাসপাতালে এনেছে, তখন কিন্তু চিকিৎসকরা শিশুটির হার্টকে সচল করার চেষ্টা করেছে। তবুও বাঁচানো যায়নি। অক্সিজেনের অভাবে শিশুটির মৃত্যু বিষয়টি সঠিক না। তবে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল