আগামী সপ্তাহে মুক্তি পাচ্ছে হিন্দি ছবি 'ওয়ানটেড'। গতকাল পর্যন্ত দেশের প্রায় ৬০টি প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তির জন্য বুকিং সম্পন্ন হয়েছে। কমপক্ষে ১০০টি প্রেক্ষাগৃহে ২৩ জানুয়ারি মুক্তি পাবে বনি কাপুর প্রযোজিত ও প্রভু দেবা পরিচালিত এ ছবিটি। এতে অভিনয় করেছেন সালমান খান, আয়েশা টাকিয়া, বিনোদ খান্না, মহেশ মঞ্জেশকার, প্রকাশ ঝাসহ অনেকে। ১৫৩ মিনিট ব্যাপ্তির অ্যাকশন, ক্রাইম, থ্রিলার গল্পের ছবিটি ভারতে মুক্তি পায় ২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। ছবিটি পুরি জাগান্ধ পরিচালিত তেলেগু ছবি 'পকিরি'র রিমেক। ওই ছবিতে প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেন মহেশ বাবু ও ইলিয়ানা ডি ক্রুজ। 'ওয়ানটেড' ছিল ২০০৯ সালে বলিউডের সবচেয়ে ব্যবসা সফল ছবি। প্রায় ৬০ কোটি রুপি বাজেটের এই ছবিটি প্রথম সপ্তাহেই শুধু আয় করেছিল ১৩৬ কোটি রুপি।
মূলত ওয়ানটেডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে হিন্দি ছবির বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড গত ২৬ নভেম্বর ছাড়পত্র দিয়েছে 'ওয়ানটেড' ছবিটিকে। এখন সেটি মুক্তি পাচ্ছে। এরপর একে একে মুক্তি পাবে- আমির খানের 'থ্রি ইডিয়টস' এবং শাহরুখ খানের 'ডন টু'। বর্তমানে ছবি দুটি সেন্সর বোর্ডে জমা রয়েছে। আর আগামী মাসে জমা পড়বে আমির খানের 'তারে জামিন পার'। অন্যদিকে খান ব্রাদার্সের আমদানিকৃত ভারতীয় বাংলা ছবি 'খোকাবাবু' এবং 'খোকা ৪২০' ছবি দুটি মুক্তি পাচ্ছে। আর গত বছরের ১৬ মে এ দেশে মুক্তি পাওয়া রাইমা সেন অভিনীত বলিউডের ছবি 'যুদ্ধ শিশু' গত মাসে আবারও মুক্তি পেয়েছিল।
হিন্দি ছবির বাণিজ্যিক যাত্রা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলে আসছে। এই বিতর্কে কার্যত চলচ্চিত্র পরিবার এবং প্রদর্শক সমিতি বিভক্ত হয়ে যায়। চলচ্চিত্র পরিবারের দাবি, হিন্দি ছবি দেশে প্রদর্শন শুরু হলে দেশীয় চলচ্চিত্র মাধ্যম হুমকির মুখে পড়বে।
অপরদিকে প্রদর্শক সমিতির দাবি, একের পর এক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দর্শকের অভাবে। মানহীন চলচ্চিত্র নির্মাণ করায় দর্শক হলমুখী হচ্ছে না। হলই যদি না থাকে তাহলে চলচ্চিত্র শিল্প দিয়ে কি হবে! আগে সিনেমা হল টিকিয়ে রাখা জরুরি। হিন্দি ছবির প্রদর্শন শুরু হলে দর্শক আবার নিয়মিত চলচ্চিত্র দেখবে। বাণিজ্য শুরু হবে। তখন দেশীয় চলচ্চিত্র নির্মাতারাও বেশি সংখ্যক হলে ছবি মুক্তি দিতে পারবে।
হিন্দি ছবির বাণিজ্যিক যাত্রার পক্ষে সাধারণ দর্শকও। তারা চায় ভালো ছবি দেখতে।
অনেক দর্শক মনে করেন, হিন্দি ছবি প্রদর্শন শুরু হলে মানহীন চলচ্চিত্রের নির্মাতা এবং প্রযোজকরা হারিয়ে যাবে। তখন টিকে থাকবে ভালো নির্মাতা, প্রযোজক। তারা তখন প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ভালো মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন। প্রথমে হয়তো সংখ্যায় কম হবে। কিন্তু মেধাবী নির্মাতারা এগিয়ে এসে একদিন সে অভাব পূরণ করবে। তখন বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের মান অনেক গুণে বেড়ে যাবে। দর্শকও দেখবে নিয়মিত। যেমনটা হয়েছে কলকাতায়। তাদের ছবির মান ভালো ছিল না। কিন্তু হিন্দি ছবির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে তারা ভালো ছবি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এখন কলকাতায় মানহীন চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে না। ভালো মানের চলচ্চিত্র দিয়ে তারা দর্শককে আবার হলমুখী করেছেন। আমাদেরও সেই পথেই হাঁটতে হবে।