এ কে খন্দকারের বইটিকে কোরানের মর্যাদা দেওয়ার জন্য যারা উঠে পড়ে লেগেছেন, তাদের প্রায় সবাই রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের বিরোধী শিবিরের। এদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী জামাত সমর্থকরা আছেন,আছেন রাজাকারদের পূণর্বাসনকারী বিএনপি সমর্থকরা। আছেন রাজনৈতিক কারনে আওয়ামী লীগের কট্টর সমালোচক গোষ্ঠী।এদের প্রত্যেকের কথাবার্তার ধরন একই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় বেশ ক'জন নেতারা বইটিকে 'একশত ভাগ সত্যভাষন' হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এ কে খন্দকার তার বইতে জিয়াউর রহমান সম্পর্কেও কিছু মন্তব্য করেছেন। বইটি থেকেই উদ্ধৃতি দেই-
''মেজর জিয়ার ঘোষণাটিকে কোনোভাবেই স্বাধীনতার ঘোষণা বলা চলে না। মেজর জিয়া রাজনৈতিক নেতাও ছিলেন না বা স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার মতো উপযুক্ত ব্যক্তিও ছিলেন না। যে ঘোষণা চট্টগ্রাম বেতার থেকে তিনি দিয়েছিলেন, ঠিক একই ধরনের একাধিক ঘোষণা ২৬ ও ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম বেতার থেকে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ও ছাত্রনেতাও দিয়েছিলেন, এমনকি বেতারকর্মীরাও একই ধরনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।''
''এখানে একটি কথা বলা প্রয়োজন, ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম বেতারের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ উদ্যোগে মেজর জিয়ার কাছে পটিয়ায় গিয়েছেন এবং তাঁকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। মেজর জিয়া নিজ উদ্যোগে তাঁদের কাছে আসেননি। ২৬ মার্চ দুপুরে এম এ হান্নান সাহেব (চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগৈর তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক) স্বাধীনতার যে ঘোষণাটি পড়েছিলেন এবং ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় মেজর জিয়া যেটা পড়েন তার মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য ছিল।''
এ কে খন্দকারের বক্তব্য অনুসারে, মেজর জিয়া স্বাধীনতা ঘোষনা দেওয়ার মতো উপযুক্ত ব্যক্তি ছিলেন না। বিএনপি নেতাদের দৃষ্টিতে একে খন্দকারের বইটি যদি 'একশত ভাগ সত্যভাষন' হয় তাহলে জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে বিএনপির দাবি করাটা মিথ্যাচার হয়।একে খন্দকারকে পীর মানা বিএনপির এখন উচিৎ 'জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক' হিসেবে প্রচারের নামে মিথ্যাচারের জন্য জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া।
লেখক: কানাডা প্রবাসী সাংবাদিক