আজ ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ইং তারিখ, দ্বাদশ সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালত, (ঢাকা) যে আদেশ আমার মামলায় দিলেন, তা একটি যুগান্তকারী রায় এবং আদালত পাড়ায় মাইলফলক। আইনজীবীরা বললেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, এই উপমহাদেশ এটি বিরল উদাহরণ হয়ে থাকবে। এই আদেশ পাওয়ার জন্য আমি মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ।
মাননীয় আদালত আজকে আদেশ দিয়েছেন- কন্যা শিশুর অভিভাবক হচ্ছেন মা। মায়ের জিম্মায়ই মেয়ে থাকবে। বাবা মাসে কেবল দুইদিন মায়ের বাড়িতে গিয়ে মায়ের উপস্থিতিতে মেয়েকে দেখে আসবেন, কিন্তু কন্যার সর্বোত্তম মঙ্গলের জন্য মায়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। অর্থাৎ, মাননীয় আদালত সাধারণ 'কাস্টডি' নয়, বরং সম্পূর্ণ 'গার্ডিয়ানশিপ' আমাকে দিয়েছেন।
বাবা তার কন্যা শিশুর পাসপোর্ট আটকে রেখেছেন। বিজ্ঞ আদালত সেটা ফেরত দিতে নির্দেশ দিলেন। যদি বাবা না দেন, তবে বাদীকে থানায় জিডি করতে বলেছেন এবং নতুন পাসপোর্ট দেবার জন্য পাসপোর্ট অফিসে বিজ্ঞ আদালত চিঠি ও আদেশ পাঠিয়ে দেবেন বলেও জানালেন। কন্যা শিশুকে নিয়ে মা দেশের ভেতরে এবং বাইরে যেতে পারবেন যেহেতু মা'ই কন্যা শিশুর অভিভাবক।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা বিজ্ঞ আইনজীবী দিলরুবা শরমিনকে, যিনি মামলাটি কেবল আইন দিয়ে নয়, মানবিক দিক বিবেচনা করে পরিচালনা এবং আইন ও মানবিক - দু'দিক থেকেই উপস্থাপন করেছেন।
একটি বিশেষ দিক না উল্লেখ করলেই নয় : সামান্য যে ৫ লক্ষ টাকার দেনমোহর - সে'টির কোন দাবি আমি করিনি, কন্যার ভরণ-পোষণ বাবা এতদিন করেননি, কোনো খোরপোষ দেননি, আমি চাইও নি এবং সেটা প্রকাশ্য আদালতেই আজকে বলেছি। বাবা'র কাছে ভরণপোষণ- এটা প্রতিটা মেয়ের অধিকার, মেয়ের দেখভাল করা প্রতিটি বাবারই দ্বায়িত্ব। সেই কাজটা এতদিন আমিই করে এসেছি - তিনি করবেন কিনা, সেটা তারই বিবেচনায় থাক।
আমার জীবনের এই অংশটায় যারা যারা সমর্থন দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেককে আমার গভীর কৃতজ্ঞতা। আপনাদের নাম নিতে চাই না, শুধু অনুরোধ করবো - মেয়েকে যেন এইভাবেই, আমার নিজের সামর্থে, মানুষ হিসেবে বড় করতে পারি, সেই দোয়া করবেন।
সততাই যে সর্বোত্তম পন্থা সেটা আবারও প্রমাণ হলো। নিশ্চিত ছিলাম, সঠিকভাবে আইনকে উপস্থাপন করতে পারলে আইনের সুশাসন যে দেশে এখনও আছে, সেটা প্রমাণ পাওয়া যায়।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি-প্রতিদিন/৩০ এপ্রিল, ২০১৮/মাহবুব