আজ সকাল সকাল এক মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে অন্য একটি কার্যালয়ে যাই। গন্তব্যস্থল ৪র্থ তলা। খেয়াল করে দেখলাম সেখানে মোট ৬ টি সচল লিফট। দুইপাশে তিনটি করে মোট ছয়টি। উপস্থিত হতেই একটি লিফট প্রায় ভর্তি হওয়াতে আমি ও আমার পাশের এক ভদ্রলোক থেমে যাই! ভাল লাগলো সবাই সুন্দর করে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে উঠছে, কেউ আগে পিছে করছে না।
ব্যতিক্রম শুধু আমার পাশের ভদ্রলোক, তিনি একসাথে তিন লিফটে উঠার চেষ্টায় মশগুল। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাণ্ড দেখছি, তিনি প্রথমে আমার সামনে এসে এক লিফটে উঠার জন্য দাঁড়ালেন (নিয়ম একটু ভাঙলেন!) তারপর যেই দেখলেন পাশের লিফট আরও দ্রুত নামছে, তিনি অতি দ্রুততার সাথে জায়গা বদল করার সাথে সাথেই দেখতে পান, তার আগের লিফট আরও দ্রুত নামছে আর নতুনটা আটকে আছে।
তিনি পুনরায় স্থান বদল করে আগের স্থানে ফেরত আসেন! উনি ফেরত আসতেই ছেড়ে আসা স্থানের লিফট তরতর করে ৪ তলায় নেমে আসে আর বর্তমানে দাঁড়িয়ে থাকা লিফট ৬ তলায় আটকে যায়! বেচারা দৌড়ে আবার ওই লিফটের কাছে যেতেই আমাদের ৬ তলায় আটকে থাকা লিফট গ্রাউন্ড ফ্লোরে চলে আসে! আমরা সবাই যখন উঠছি তখনও তার লিফট ৪ তলায়!
তিনি দুই হাত কোমরে ধরে উদাস নয়নে আমাদের লিফটের দিকে তাকিয়ে রইলেন। তিনি চাইলে আমাদের লিফটে আসতে পারতেন। কিন্তু শেষে তিনি আর এলেন না! তার ফ্যালফ্যাল চাহনি দেখে আমার খুব মায়া হচ্ছিল কিন্তু মনে শুধু ঘুরপাক খাচ্ছিল আমরা এভাবেই সব হারিয়ে টের পাই বুঝি! আহা অস্থিরতা, আহা জীবন!
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
লেখক: অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন), ওয়ারী বিভাগ, ডিএমপি, ঢাকা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন