রমজানের এ সময়টাতে বাত ব্যথা রোগীদের একটু বেশি যত্নবান হতে হয়। অন্যথায় এবাদতের সময় ভোগার আশঙ্কা থাকে। বাতব্যথা জনিত রোগের মধ্যে আথ্রাইটিস উল্লেখযোগ্য। আথ্রাইটিস একটি গ্রিক শব্দ। মানুষের শরীরের জোড়ার অনেকগুলো রোগ বা সমস্যাকে একসঙ্গে আথ্রাইটিস বলা হয়। আর আথ্রাইটিস সম্পর্কে জানার আগে মানুষের জয়েন্ট বা অস্থি সন্ধি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। মানুষের শরীরে বহু জয়েন্ট বা জোড়া রয়েছে এবং এসব জোড়া তিন প্রকার আর এসব জোড়ায় যদি কোনোভাবে প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন হয় তখন আমরা ডাক্তারি ভাষায় আথ্রাইটিস বলে থাকি। আমাদের বাংলাদেশে আথ্রাইটিস আক্রান্ত হলে অনেকে একে বাত রোগ বলে থাকে। আথ্রাইটিস এক বা একাধিক জোড়ায় ব্যথা হবে। জোড়া ফুলে যেতে পারে, গরম হতে পারে, নড়চড়ায় ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে, রোগীদের দৈনন্দিন কাজকর্ম চলাফেরায় অসুবিধা হবে, অনেক সময় জ্বরও আসতে পারে, পাশাপাশি শরীর ক্লান্তবোধ, অবসাদ, হতাশা, অনিদ্রা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় দীর্ঘদিন রোগ ভোগে শরীরের মাংসপেশিগুলোও শুকিয়ে যেতে পারে। আথ্রাইটিস একশরও বেশি ধরনের। যে কোনো বর্ণের যে কোনো বয়সে যে কোনো সংস্কৃতির মানুষের আথ্রাইটিস হতে পারে। তবে পুরুষের তুলনায় মহিলাদের আথ্রাইটিস বেশি হয়।
চিকিৎসা : আথ্রাইটিস জোড়ার রোগ ও বিভিন্ন প্রকার আথ্রাইটিস রয়েছে। যদি কারও এ জাতীয় সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসক এ ক্ষেত্রে কিছু পরীক্ষা করাতে পারেন। যেমন- রক্ত পরীক্ষা, সেরোলজি পরীক্ষা, এক্সে তাছাড়া রোগের রক্ষণ দেখেও বোঝা যায় যে কী জাতীয় আথ্রাইটিস হয়েছে। আথ্রাইটিসের প্রকারভেদে কিছু ওষুধ খেয়ে যেতে হয়। যেমন- ব্যথানাশক এনএসএআইডিএস, ডিজিজ মডিফাইং ওষুধ, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম। আথ্রাইটিসে ফিজিওথেরাপি অত্যন্ত কার্যকরী চিকিৎসা। এতে অনেকাংশে রোগীর সমস্যা ব্যথা বেদনা দূর হয় এবং রোগী স্বাভাবিক চলাফেলা ও কাজকর্ম করতে পারে। চিকিৎসক প্রয়োজন বোধে আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, ইন্টারফেরেন সিয়াল থেরাপি বিভিন্ন নিয়মমাফিক কৌশলগত ব্যায়াম, মেনুয়াল থেরাপি প্রয়োগের মাধ্যমে রোগীর সমস্যা বহুলাংশে লাঘব হয় ও অস্থি সন্ধি স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ফিরে পায়, ফলে রোগী আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।
ডা. সফিউল্যাহ প্রধান, চেয়ারম্যান, ডিপিআরসি হাসপাতাল, প্রবাল হাউজিং, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।