খাবারের স্বাদ বাড়াতে মসলার বিকল্প নেই। ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় সব তরকারিতেই ব্যবহার করা হয় মরিচ ও হলুদ। হাজার বছর ধরে এশিয়াতে নানাভাবে হলুদ ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং বিশ্বাস করা হয় এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। বিশ্বের নানা প্রন্তে কফি শপেও প্রচলন শুরু হয়েছে হলুদের। এসব মসলা কী সত্যিই আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর না উপকারী- এমন প্রশ্ন স্বভাবতই মনে উঁকি দিতে পারে।
মরিচ
শরীরে মরিচের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে অনেক গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। এতে দেখা গেছে মরিচে উপকার-ক্ষতি দুই-ই আছে। মরিচের প্রধান সক্রিয় উপাদান ক্যাপসাইসিন। যখন আমরা মরিচ খাই তখন এর অনু আমাদের শরীরের তাপমাত্রার কাঠামোর সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে যা মস্তিষ্কে তাপের অনুভূতি জাগায়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যাপসাইসিন আয়ু বাড়াতে সহায়তা করে। যারা কখনই মরিচ খায়নি তাদের চেয়ে যারা সপ্তাহে অন্তত চার বার মরিচ খায় তাদের মৃত্যুঝুঁকি কম। হার্ভাড স্কুলের একটি গবেষণায়ও দেখা গেছে, যারা বেশি মরিচ খান তাদের মধ্যে ক্যান্সার, হৃদরোগ ও সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার হার কম। তবে তার মানে এই নয়, প্রচুর মরিচ খাওয়া শুরু করলেই তা আপনার স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখবে।
২০১৯ সালে ইতালিতে এক গবেষণায় দেখা গেছে, মরিচ খাওয়ার অভ্যাস মৃত্যুঝুঁকি কমিয়ে দেয়। তবে এটি শুধু পর্যবেক্ষণ, এটা জানা অসম্ভব যে মরিচ মানুষকে দীর্ঘায়ু হতে সহায়তা করে নাকি স্বাস্থ্যবান মানুষদের মধ্যেই স্বভাবতই মরিচ খাওয়ার স্বাভাবিক প্রবণতা রয়েছে।
হলুদ
দক্ষিণ এশিয়ায় প্রায় সব পরিবারে হলুদের প্রচলন রয়েছে। কারকিউমিন নামক পদার্থ থাকায় এটিকে মানব শরীরের জন্য উপকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। প্রদাহ, চাপ ও বিভিন্ন শারিরীক সমস্যায় বিকল্প ওষুধ হিসেবে হলুদের ব্যবহার রয়েছে। অসংখ্য গবেষণায় ল্যাবরেটরিতে কারকিউমিনে ক্যান্সারবিরোধী প্রভাব থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। হলুদে তাপ দেওয়া হলে এটির রাসায়নিক উপাদানে পরিবর্তন আসে, ফলে এর অনেক উপকারী গুণ নষ্ট হয়ে যায়।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা