কভিড-১৯ একটি রোগ। সমগ্র বিশ্ব আজ এই কভিড-১৯ এ বিপর্যস্ত। পৃথিবী গতিশীল। সেই সঙ্গে গতিশীল মানুষ। কিন্তু আজ একটা ভাইরাস সমগ্র বিশ্বকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। এ পর্যন্ত কভিড-১৯ ১৮ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে প্রতিনিয়ত মৃত্যুহার বাড়ছে। আমেরিকা, কানাডা, ইতালি, স্পেনসহ প্রতিদিন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে অস্বাভাবিক হারে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুহার।
* কভিড-১৯ রোগটি SARS-CORONA-2 Virus এর মাধ্যমে হয়। এটি একটি zoonotic virus
* কভিড-১৯ এর উপসর্গ: জ্বর, শুকনো কাশি, গলা ব্যথা, খাবারে অরুচি, মাথাব্যথা, সামান্য সর্দি, শরীর ব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া (কিছু কিছু ক্ষেত্রে)।
* কভিড-১৯ এর সংক্রমণ Respiratory Droplet অর্থাৎ হাঁচি/কাশির মাধ্যমে Person to Person Contact অর্থাৎ সংক্রমিত ব্যক্তির কাছ থেকে অন্য ব্যক্তি/নিকটবর্তী মানুষ।
* কভিড-১৯ এর ব্যাপারে করণীয় :
১. হাত সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ভালো করে ধুতে হবে/পরিষ্কার করতে হবে।
২. মুখ, নাক, চোখে হাত না দেওয়া।
৩. কোনো ধরনের জনসমাবেশে অংশগ্রহণ না করা।
৪. অন্ততপক্ষে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে সম্পূর্ণ আইসোলেটেড বা আলাদা থাকা।
৫. ১ থেকে ২ মিটার কিংবা ৫ থেকে ৬ ফিট একে অন্য থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে রাখা।
৬. ঘরে থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কাজ ছাড়া ঘর থেকে না বের হওয়া জরুরি।
৭. মাস্ক শুধু অসুস্থ এবং যারা সরাসরি রোগীর সেবায় নিয়োজিত তারা ব্যবহার করবেন (যেমন- ডাক্তার, নার্স অন্যান্য সেবাকর্মী)।
* ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসা: গবেষণা চলছে কিন্তু কোনো টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। প্রতিষ্ঠিত কোনো চিকিৎসা নির্দেশনা নেই।
* করোনায় যে কোনো বয়সী লোক আক্রান্ত হতে পারে। তবে বয়স্কদের কিংবা ডায়াবেটিস, অন্যান্য যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা করোনায় আক্রান্ত হলে জটিলতা বাড়বে।
* ধূমপায়ীদের ঝুঁকি অনেক বেশি সাধারণ মানুষের তুলনায়।
কভিড-১৯ সম্পর্কে আতঙ্কিত হলে চলবে না। সমাজের প্রতিটি মানুষকে সচেতন হতে হবে। এটি বিশ্বব্যাপী করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ। সম্পূর্ণ নতুন একটি ভাইরাসজনিত রোগ কভিড-১৯-এর ব্যাপারে বিশ্বের কোনো দেশই প্রস্তুত ছিল না। কিংবা প্রস্তুত থাকার কথাও না। আর তাই আমরা যে যার অবস্থান থেকে সম্মিলিতভাবে কাজ করব সহযোগিতা-সহমর্মিতার মনোভাব নিয়ে। করোনামুক্ত বিশ্ব এবং বাংলাদেশ দেখব আগামীতে। করোনা প্রতিরোধে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতাই হবে আমাদের মূল অস্ত্র আর এই সচেতনতার মাধ্যমেই আমরা করোনামুক্ত একটি ভোরের প্রত্যাশায় থাকব।
লেখক: কিডনি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সহকারী অধ্যাপক, পোস্ট ডক্টরাল ক্লিনিকাল রিসার্চ ফেলো, ড্রেক্সেল ইউনিভার্সিটি
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা