কলা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সহজলভ্য একটি ফল। কলার প্রিবায়োটিক (এক প্রকারের ফার্মেন্টেবল ফাইবার) অন্ত্রের উপকারি ব্যাকটেরিয়াকে সাহায্য করে। এসব সহায়ক ব্যাকটেরিয়া হজম বাড়ায়, ঠান্ডার স্থায়িত্ব কমায় ও ওজন কমাতে সহযোগিতা করে। নিয়মিত খেলে সাধারণ রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে সহায়তা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি মাঝারি আকারের কলাতে ৪২২ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে, যা দৈনিক সুপারিশকৃত মাত্রার প্রায় ১২ শতাংশ। শরীরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে প্রচুর পটাশিয়াম প্রয়োজন। এটি মাংসপেশি সংকোচন, স্নায়ু সংকেত প্রেরণ, কোষে পুষ্টি সরবরাহ, হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ ও শরীরে লবণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। শরীর পর্যাপ্ত পটাশিয়াম না পেলে উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি পাথরের ঝুঁকি বেড়ে যায়, ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভূত হয় এবং মাংসপেশিতে টান পড়ে বা ব্যথা হয়।
হার্টের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে কলার পটাশিয়াম গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণা বলছে, পর্যাপ্ত পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে রক্তচাপ কমে ও স্ট্রোকের সম্ভাবনা হ্রাস পায়। পটাশিয়াম শরীর থেকে প্রস্রাবের মাধ্যমে বাড়তি সোডিয়াম বের করে দেয়।
কলাতে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন বি৬ রয়েছে। কলাতে এক-তৃতীয়াংশ ভিটামিন বি৬ পাওয়া যায়, যা গর্ভস্থ বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ সাধনের জন্য দরকারি। ভিটামিন বি৬ বিপাকের সঙ্গে সম্পৃক্ত এনজাইম রিয়্যাকশনেও সহায়তা করে।
কলা ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ব্যালেন্সড-ডায়েটের অংশ হিসেবে কলা খেলে ক্ষুধা কমে যেতে পারে। কলাতে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ নামক ফাইবার থাকে, যা কম ক্যালরি খেতে ও ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
কলা কিডনিকে সুস্থ রাখতে পারে। প্রতিদিন একটি কলা খেলে কিডনির সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নাও হতে পারে।
কলা শর্করার ভালো উৎস। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের কলা খাওয়াতে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। বেশিরভাগ সময় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস আর নিয়মিত শরীরচর্চা করলে প্রতিদিন দু'টি কলা খাওয়া যেতে পারে।
কলা রক্তশূন্যতা দূর করে। লৌহের ঘাটতি দেখা দিলে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতার সমস্যা দেখা দেয়। রক্তের লোহিত কণিকা বাড়াতে কলা সহায়তা করে। এছাড়াও কলা উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ। নিয়মিত কলা খাওয়া পেট পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।
কলা পাকস্থলীর অ্যাসিড পরিশোধিত করতে পারে। তাই বুক-জ্বালা পোড়ার সমস্যায় একের অধিক কলা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির