গ্লুকোমা বা চোখের রোগ প্রতিরোধে রক্তের সম্পর্কীয় আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে বিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, ‘এটি বংশগত রোগ। আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে বিয়ে হলে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় চার গুণ বেড়ে যায়। বাংলাদেশে শতকরা দু'জন লোক গ্লুকোমায় আক্রান্ত। শতকরা ৫০ জন লোক জানেন না তার গ্লুকোমা রোগ আছে।’
বিশ্ব গ্লুকোমা সপ্তাহ উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, গ্লুকোমা এমন একটি রোগ, যা নীরব ঘাতকের মতো কাজ করে। এজন্য একে ছাই চাপা, তুষের আগুনের সঙ্গে তুলনা করে হয়। গ্লুকোমায় একবার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা পুনরায় সুস্থ হয় না। অর্থাৎ রোগীর স্থায়ীভাবে ক্ষতি হয়ে যায়। তাই গ্লুকোমাকে প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করতে হবে। রোগী প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা পেলে সুস্থ জীবন-যাপন করতে পারবেন।
চিকিৎসার পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে জানিয়ে গ্লুকোমা সোসাইটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. শেখ এমএ মান্নাফ বলেন, ‘রোগী অনুযায়ী দেশে মোট ৯০ জন গ্লকোমার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। এছাড়া দেশের সব চক্ষু চিকিৎসকই গ্লকোমার চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গ্লুকোমা তিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। ওষুধ, লেজার ও সার্জারির মাধ্যমে। যে রোগীদের অবস্থা অ্যাডভান্স পর্যায়ে, তাদের সার্জারি করা হয়। যাদের সাধারণ পর্যায়ে আছে, তাদের ওষুধ দিই। তবে যাদের ওষুধে অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের লেজার ট্রিটমেন্ট করা হয়। দেশেই সর্বাধুনিক পদ্ধতিতে সার্জারি করা হয়। এক্ষেত্রে সফলতার হার প্রায় শতভাগ।’
চিকিৎসার পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে জানিয়ে গ্লুকোমা সোসাইটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. শেখ এমএ মান্নাফ বলেন, বর্তমানে দেশে মোট ৯০ জন গ্লকোমার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। এছাড়া দেশের সব চক্ষু চিকিৎসকই গ্লকোমার চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গ্লকোমা সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. হাসান শহীদ। সভাপতির বক্তব্যে গ্লুকোমা রোগের গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গ্লকোমাকে তুষের আগুন উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্লকোমা এমন এক অন্ধত্ব যার কোন প্রতিকার নেই। এটি নিরব ঘাতকের মতো কাজ করে। এজন্য একে ছাই চাপা, তুষের আগুনের সঙ্গে তুলনা করে হয়। গ্লকোমায় একবার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা পুনরায় সুস্থ হয় না। অর্থাৎ রোগী স্থায়ীভাবে ক্ষতি হয়ে যায়। তাই গ্লকোমাকে প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করতে হবে। এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা পান তাহলে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শামস মোহাম্মদ নোমান বলেন, গ্রাম থেকে যারা আসে তাদের দেরিতে ধরা পরে। শহরে দ্রুত শনাক্ত হয়। শনাক্তের পরিমাণটা আসলে অঞ্চলের ওপর নির্ভর করে না।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত