যেসব রোগ একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় না, অর্থাৎ ছোঁয়াচে না তাদের অসংক্রামক ব্যাধি বলা হয়। বিশ্বব্যাপী চারটি প্রধান অসংক্রামক রোগের একটি হলো ডায়াবেটিস, যা এখন মরণঘাতক এবং মৃত্যুহারে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের শহর ও গ্রাম উভয় ক্ষেত্রেই ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছে। ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন অনুমান করেছে যে, বাংলাদেশে প্রায় ১৩ কোটি এক লাখ মানুষ শরীরে ডায়াবেটিস নিয়ে বসবাস করছে এবং আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হবে।
ডায়াবেটিস পরিচালনা করার সময় স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের প্রধান উদ্বেগগুলোর মধ্যে একটি হল কীভাবে অন্য কোনও কমোর্বিডিটি শুরু না করে HbA1c দক্ষতার সাথে কমানো যায় - যেমন ASCVD (অ্যাথেরোস্ক্লেরোটিক কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ), এইচএফ (হার্ট ফেইলিওর) এবং CKD (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ)। SGLT2 (সোডিয়াম-গ্লুকোজ কোট্রান্সপোর্টার-2) ইনহিবিটরস, সেই প্রেক্ষাপটে, ডায়াবেটিস চিকিত্সা ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কারণ এই উদীয়মান থেরাপি বহুমুখী এবং রোগীদের প্রয়োজন পূরণ করে থাকে।
সানোফি বাংলাদেশ ১ এপ্রিল ২০২২ থেকে সাইনোভিয়া ফার্মা হিসেবে যাত্রা শুরু করে, তখন এর প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল বাংলাদেশি রোগীদের অপূর্ণ চাহিদা মেটাতে যুগান্তকারী নতুন এবং উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আসবে। তারই ধারাবাহিকতায় সে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, টাইপ 2 ডায়াবেটিস রোগীদের আরও দক্ষ গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণের জন্য সাইনোভিয়া ফার্মা সাম্প্রতিকতম SGLT2 ইনহিবিটর আর্টু (আর্টুগ্লিফ্লোজিন) নিয়ে এসেছে, যা উদ্বোধন করে।
বারডেম জেনারেল হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ফারুক পাঠানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশের ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক এ কে আজাদ খান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক এস এম আশরাফুজ্জামান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ, 'ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্ট ফোকাসিং অন সিভিডি আউটকাম' এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (NIKDU)- এর প্রফেসর শামীম আহমেদ 'ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্ট ফোকাসিং অন রেনাল প্রোটেকশন' - বিষয়ক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ)-এর নেফ্রোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজেস (এনআইসিভিডি) এর পরিচালক অধ্যাপক মীর জামাল উদ্দিন, ইউনাইটেড হাসপাতালের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান, বারডেম (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ইন ডায়াবেটিস, এন্ডোক্রাইন অ্যান্ড মেটাবলিক ডিসঅর্ডার) -এর এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ফিরোজ আমিন, বিএসএমএমইউ-এর সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম, বারডেম-এর সহযোগী অধ্যাপক ফারিয়া আফসানা সহ বিশেষজ্ঞ প্যানেলটি দেশের ডায়াবেটিস পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা এবং ডায়াবেটিস সম্পর্কিত কমরবিডিটিগুলো পরিচালনায় ওষুধের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা উপস্থাপন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, “ডায়াবেটিস পৃথিবীতে মহামারী রূপে দেখা দিয়েছে। তাছাড়া এই রোগ একবার হলে আজীবনের জন্য থেকে যায়। তবে এই রোগ সম্পূর্ণ রুপে নিয়ন্ত্রণে রাখলে সব ধরনের শারীরিক জটিলতা পরিহার করে সুস্থ, স্বাভাবিক ও কর্মঠ জীবনযাপন করতে পারবে। বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস চিকিৎসার অনেক বৈজ্ঞানিক উন্নতি হয়েছে। এ ব্যাপারে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য SGLT2 inhibitor গ্রুপের ওষুধ। একমি সাইনোভিয়া ফার্মা পিএলসি যে এই গ্রুপের (আর্টুগ্লিফ্লোজিন) ঔষুধ বাংলাদেশে সহজলভ্য করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই ওষুধটির মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগ নিয়েও রোগীরা ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারবে।”
স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাইনোভিয়া ফার্মার জেনারেল ম্যানেজার, সেলস- এ কে এম রফিক এবং জ্ঞাপন উপস্থাপন করেন সাইনোভিয়া ফার্মার বিপণন পরিচালক সৈয়দ এ বি তাহমিদ।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত