প্যারিসে হামলার ঘটনায় বেলজিয়ামে বসবাসরত একটি ফরাসি পরিবারের দিকে নজর পড়েছে তদন্ত কর্মকর্তাদের। গত শুক্রবার মধ্যরাতের ওই হামলায় ওই পরিবারের তিন ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই নিহত হয়েছে। এরপর তাদের আরেক ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এবার তৃতীয় ভাই সালাহ আবদেসালাম সালাহকে (২৬) খুঁজতে নোটিশ জারি করা হয়েছে।
ফরাসী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলার কয়েক ঘণ্টা পর গত শনিবার বেলজিয়াম সীমান্তের কাছে সালাহ'র গাড়ি থামায় পুলিশ। সালাহকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে গাড়িতে আরও লোক ছিল।
বলা হয়েছে, সালাহ একটি ভিডব্লিউ পোলো কার ভাড়া করেন, যা বাতাক্লঁ কনসার্ট হলের কাছে পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, হামলাকারীরা এই গাড়িটি ব্যবহার করেছিল। ওই কনসার্ট হলে ৮৯ জনকে হত্যা করা হয়।
সালাহকে ধরতে বেলজিয়াম প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স। বেলজিয়ামে ইতোমধ্যে প্যারিসে হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করা হয়েছে।
ফরাসী কর্তৃপক্ষ সালাহকে 'বিপজ্জনক' হিসেবে উল্লেখ করেছে। জনগণকে তার কাছ থেকে দূরে থাকতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ফরাসী নাগরিক সালাহ ও তার ভাইরা বেলজিয়ামে বসবাস করছেন। তার এক ভাই ব্রাহিম আবদেসালাম (৩১) বাতাক্লঁ’র কাছে বলেভার্দ ভলদেয়ারের একটি বারের বাইরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
সালাহর আরেক ভাই মোহাম্মদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্যারিস থেকে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের নিকটবর্তী মলেনবিকে আসার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে ফরাসি কর্তৃপক্ষ হামলাকারী সাতজনের মৃতদেহ পাওয়ার কথা বললেও হামলার দায় স্বীকার করে দেওয়া আইএসের বার্তায় তাদের সংখ্যা আটজন বলা হয়েছে। এ থেকেই একজন পালিয়ে যাওয়ার ধারণা এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে পালিয়ে যাওয়া ওই ব্যক্তি সালাহ।
প্রসিকিউটররা বলছেন, ঘাতক একটি বহুজাতিক গ্রুপের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মধ্যপ্রাচ্য, বেলজিয়াম ও সম্ভবত জার্মানিতেও তার যোগাযোগ রয়েছে।
ফরাসী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নার্ড ক্যাজেনুভে বলেছেন, বেলজিয়ামভিত্তিক কয়েকজনের দল প্যারিসে শুক্রবারের ওই হামলার প্রস্তুতি নেয়।
শুক্রবার রাতে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বাটাক্লঁ কনসার্ট হলসহ ছয়টি স্থানে একসঙ্গে হামলা হয়। দেশটির ইতিহাসে অর্ধশতকেরও বেশি সময়ের ভয়াবহতম এ হামলায় ১৩২ জন নিহত হয়েছেন। আহত ৩৪৯ জনের মধ্যে ৯৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে প্যারিসের পাবলিক প্রসিকিউটর ফ্রাঁসোয়া মলিয়েঁ জানিয়েছেন।
ওই ঘটনায় ৭ হামলাকারীও নিহত হয়। পরবর্তী সময়ে এ হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে আইএস (ইসলামিক স্টেট)।
বিডি-প্রতিদিন/১৬ নভেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ