মুম্বাইয়ের খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী হেমা উপাধ্যায় ও তার আইনজীবী হরিশ ভামভানি হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ের কান্দিবালির একটি নর্দমা থেকে তাদের দু'জনের অর্ধনগ্ন বাক্সবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের সন্দেহভাজনের তালিকায় শীর্ষ নামটি চারকপ নামে একটি ওয়্যারহাউসের মালিক গতু। হেমা ওই ওয়্যারহাউস থেকে পুরনো যন্ত্রাংশ নিয়ে শিল্পকর্ম (ফেব্রিকেশন আর্ট) করতেন। পুলিশ জানায়, হেমা তার আইনজীবর সঙ্গে সর্বশেষ মোবাইল ফোনে কথা বলেন চারকপ ওয়্যারহাউসের একটি গুদামঘর থেকে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে দু'জনেরই মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। ওই গুদামঘরের একটু দূরেই পরদিন নর্দমা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, পাঁচ লাখ টাকার লেনদেন নিয়ে গতুর সঙ্গে মেহার ঝামেলার সূত্রপাত।
ওই ওয়্যারহাউসের মালিককে গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। ওয়্যারহাউসের এক কর্মচারীকে এরইমধ্যে আটক করা হয়েছে।
এদিকে এক ট্রাকচালক পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, খুনিরা একটি ট্রাকে করে লাশ দুটি গুদামঘরের বাইরে নিয়ে নর্দমায় ফেলে দিয়ে যায়। পরিত্যক্ত মালামালের দু'টি কার্টন ভাগাড়ে ফেলে দেওয়ার কথা বলে ট্রাকটি ভাড়া নেয় তারা।
ওই ট্রাকচালক পুলিশকে বলেছেন, পরদিন সকালে পত্রিকায় সংবাদ দেখে আসল ঘটনা জানতে পারি। এরপর সঙ্গে সঙ্গে আমার মালিককে ফোনে ঘটনাটি জানাই। তিনি আমার সঙ্গে দেখা করে পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই হত্যার ঘটনায় ট্রাকচালক প্রধান প্রত্যক্ষদর্শী।
এদিকে আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে সোমবার জানানো হয়, পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স (এসটিএফ) বারানসি থেকে দু'জনকে গ্রেফতার করেছে। মোবাইল এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক টাওয়ারের গেজেটের সূত্র ধরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। এ দু'জনই মুম্বাইয়ে ফেব্রিকেশন শিল্পী হিসেবে কাজ করতেন। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের পরই মুম্বাই থেকে গা ঢাকা দেয় তারা। এ দু'জনকে জিজ্ঞাসাদে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে পুলিশের ধারণা।
এর আগে সকালে জানা গিয়েছিল, জোড়া খুনের ঘটনায় এক শিল্পীকে খুঁজছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় হেমাকে তার আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে দেখা করতে বলেন ওই শিল্পী। ঘটনাচক্রে তার পরের দিনই শহরতলির কান্দিবালি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় দু'জনের মৃতদেহ।
ওই শিল্পী এবং ওয়্যারহাউসের মালিক ছাড়াও ওই খুনে সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন হেমার প্রাক্তন স্বামী চিন্তন উপাধ্যায়। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
সূত্র : এনডিটিভি ও আনন্দবাজার অনলাইন।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ ডিসেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ