কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন উত্তর পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অাসাম (উলফা) নেতা অনুপ চেটিয়া ওরফে গোলাপ বরুয়ার। বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে গুয়াহাটির কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।
এর আগে বুধবার শর্ত সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা চারটি মামলার শেষটিতেও জামিন পান চেটিয়া। এরপরই কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ পরিষ্কার হয়ে যায় তাঁর। তবে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও আদালতের নির্দেশ ছাড়া অাসামের বাইরে যেতে পারবেন না এবং তদন্তে কোন রকম ব্যাঘাত ঘটাতে পারবেন না তিনি।
কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরই অাসামের দেরগাঁও-তে নিজের জন্মস্থানের দিকে রওয়ানা দিয়েছেন অনুপ চেটিয়া। তার আগে সাংবাকিদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন ‘আমার জীবনের অর্ধেক সময়টাই দেশের এবং সাধারণ মানুষের জন্য লড়াই করে কাটিয়েছি। এবার বাকী জীবনটা শান্তি, অাসামের সামাজিক উন্নয়ন এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্য ব্যায় করব।
উলফার সঙ্গে সরকারের শান্তি আলোচনার দিকটিকে সামনে রেখেই অনুপ চেটিয়ার প্রতি কেন্দ্রীয় ও অাসাম রাজ্য সরকারের তরফে নমনীয়তা দেখানো হচ্ছে। এই লক্ষ্যেই গত ১৭ ডিসেম্বর টেররিস্ট এন্ড ডিসরাপটিভ অ্যাক্টিভিটিস (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট বা টাডা আইনের দুইটি মামলাতেও চেটিয়াকে জামিন দিয়েছিল আদালত।
প্রসঙ্গত, অনুপ্রবেশ, জাল পাসপোর্ট, বিদেশি মুদ্রা রাখার অভিযোগে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের পুলিশ অনুপ চেটিয়াকে আটক করে। এরপর থেকে গত ১৮ বছর ধরে বাংলাদেশের কারাগারে বন্দি ছিল তিনি। অবশেষে চলতি বছরের ১১ নভেম্বর চেটিয়াকে ভারতের হাতে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। খুন, অপহরণ, হুমকিসহ গুয়াহাটিতে মোট চারটি রাষ্ট্রবিরোধী মামলা ছিল তার বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ থেকে ভারতের কাছে হস্তান্তরের পরই চেটিয়ার বিরুদ্ধে এই চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। চেটিয়ার মুক্তির পরই কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে উলফার শান্তি আলোচনায় যোগদানের ক্ষেত্রে আর কোন বাধা থাকল না বলেই মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি দিল্লিতে কেন্দ্র-উলফা শান্তি বৈঠকেই উলফার তরফে পরিষ্কার করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল চেটিয়া ছাড়া ভবিষ্যতে এই শান্তি বৈঠক কোন মতেই অনুষ্ঠিত হতে পারে না।
বিডি-প্রতিদিন/২৪ ডিসেম্বর, ২০১৫/মাহবুব