ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমে সীমান্তের শত্রুদের ঘায়েল করতে চালালেন ‘অপারেশন সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’। সেখানে তিনি শতভাগ সফল। তারপর দেশের ভেতরের শত্রুদের ধ্বংস করতে চালালেন ‘নোট ব্যান স্ট্রাইক’। এই পদক্ষেপেও তাকে সফলই বলা যায়। এবার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির টার্গেট ‘বেনামি সম্পত্তি’। ভারতের অর্থনৈতিক গতি স্বাভাবিক ও স্বচ্ছ রাখতে এই মিশনে নামছেন তিনি।
গত ১৬ ডিসেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাফ জানিয়ে দিলেন, কর ফাঁকিদাতা কালো মুদ্রাওয়ালাদের ছাড়ছেন না তিনি। তাই এবার তিনি বেশ জোরালোভাবেই নামছেন বেনামি সম্পত্তি রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনতে।
গত ৮ নভেম্বর রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া আকস্মিক ভাষণে নরেন্দ্র মোদি প্রচলিত ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিলের ঘোষণা দেন। হঠাৎ এ সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে তিনি কালো মুদ্রা জব্দের লক্ষ্যকে তুলে ধরেন।
কিন্তু তার পর থেকেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি অর্থনীতিবিদেরা বলতে থাকেন, দেশের মোট কালো মুদ্রার ‘একেবারে অল্প অংশ’ই নগদ হিসাবে রয়েছে। বাকিটার বেশিরভাগই জমি, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ ও মূল্যবান অলঙ্কার গহনায় বেনামি সম্পত্তি হিসেবে রূপান্তরিত হয়ে আছে।
কেউ তার নিজের অর্থ দিয়ে স্বামী-স্ত্রী, সন্তান বা পরিবারের কোনো সদস্যের নামে জমি-স্থাপনা-অলঙ্কার কিনে রাখলে অথবা পরিবারের কারও নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে নিজের অর্থ সেখানে গচ্ছিত রাখলে তাকে বেনামি সম্পত্তি বলে।
রাজনীতিবিদ ও অর্থনীতিবিদদের এ আশঙ্কার প্রেক্ষিতে মোদি বলেন, “আবাসন খাতসহ নানা দিকের বেনামি সম্পত্তির ধোঁয়াশা কাটিয়ে উঠতে আমাদের দৃঢ় প্রচেষ্টা থাকবে। এবার সেদিকেই আমরা যাচ্ছি। করফাঁকিদাতাদের নিঃশেষ করার মিশন সহসাই শেষ হচ্ছে না।”
নোট বাতিলের সময়েই বেনামি সম্পত্তির বিরুদ্ধে অভিযানের অঙ্গীকার করেছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। নোট বাতিলের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চান তিনি। এরমধ্যেই রাজনীতিবিদদের একটি অংশ তার পক্ষে দাঁড়িয়ে সমর্থন জানাতে থাকায় এবং নোট বাতিল পরবর্তী পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী আগের সেই অঙ্গীকারই পুনর্ব্যক্ত করলেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬/ তাফসীর-৪