আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন। পাশাপাশি শিল্প-কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হবে এই অজুহাত দেখিয়ে জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ না করার কথাও বলেছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় এই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে পৃথিবীর কতটা ক্ষতি হবে তার হিসেব বের করার কাজে নেমে পড়েন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বৈশ্বিকভাবে গৃহীত উদ্যোগুলো বাস্তবায়নে চার বা আট বছর দেরি করে তাহলে তা একাই পৃথিবীকে জলবায়ু “ডেঞ্জার” জোনে ঠেলে দিতে সক্ষম হবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই অবহেলা দীর্ঘায়িত হলে এবং অন্যান্য দেশগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের পদাঙ্ক অনুসরণ করলে এর ফলাফল ভয়াবহ হতে বাধ্য।
গত সোমবার ন্যাচার ক্লাইমেট চেঞ্জ সাময়িকীতে প্রকাশিত একটি নতুন ভাষ্য নিবন্ধেও একই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনটি লিখেছেন- সু্ইজারল্যান্ডের জুরিখের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত বিশ্ববিদ্যাল ইটিএইচ জুরিখ এর ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমোসফেরিক রিসার্চ এর গবেষক বেঞ্জামিন স্যান্ডারসন।
এতে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি সবুজ জ্বালানি প্রযুক্তি তৈরির গবেষণায় অর্থ বরাদ্দ দেওয়াও বন্ধ করে দেয় এবং অন্য দেশগুলোও একই কাজ করে তাহলে আরও দ্বিগুন ক্ষতি হবে। আর যুক্তরাষ্ট্র যদি আরও বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ায় এবং বিশ্বও তার মতো করে তাহলে তিনগুন ক্ষতি হবে পৃথিবীর।
প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণের যে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র যদি বাস্তবায়নে আট বছর বা আরও বেশি দেরি করে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোও একই কাজ করে তাহলে এতে ৩৫০ বিলিয়ন টন কার্বন বেশি নিঃসরিত হবে। যার ফলে বিশ্ব তাপমাত্রা .২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি বাড়বে। একইসঙ্গে বিশ্ব তাপমাত্রা বাড়ার হার এর বিপদসীমা অতিক্রম করে যাবে। অর্থাৎ বিশ্ব তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার শিল্প বিপ্লবের আগেকার সময়ের চেয়ে মাত্র ২ ডিগ্রির বেশি বাড়তে না দেওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা ছাড়িয়ে যাবে।
সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট এবং ওয়াশিংটন পোস্ট
বিডি প্রতিদিন/২৯ ডিসেম্বর ২০১৬/এনায়েত করিম