যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফরচুন-৫০০’ কোম্পানির মধ্যে ৪৩ ভাগ হচ্ছে ইমিগ্র্যান্টদের। ‘সেন্টার ফর আমেরিকান এন্টারপ্রেনারশিপ’ পরিচালিত গবেষণা জরিপে এ তথ্য উদঘাটিত হয়েছে। এসব কোম্পানির মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তি শিল্প-কারখানার ৪৫ ভাগের মালিক হচ্ছেন ইমিগ্র্যান্টরা। এ বছর পরিচালিত ওই গবেষণায় আরো উদঘাটিত হয়েছে যে, সারা আমেরিকায় অন্যান্য সেক্টরেও বিকাশমান শিল্প-কারখানার সিংহভাগই ইমিগ্র্যান্টদের। ইমিগ্র্যান্টদের কোম্পানির মধ্যে পেপসিকো, ডিউপন্ট, কলগেট অন্যতম। এ গবেষণা প্রতিবেদনটি এমন সময়ে প্রকাশ করা হলো যখোন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন ইমিগ্র্যান্ট-বিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণে নানা মন্তব্য করছেন। বিশেষ করে ক্যালিফোর্নিয়া, নিউইয়র্কসহ কয়েকটি স্থানে ইমিগ্র্যান্ট কর্তৃক সন্ত্রাসী হামলার উদাহরণ টেনে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন নীতি সংকুচিত করার কথা বলছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গবেষণায় আরও জানা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে লাভবান কোম্পানির অধিকাংশই পরিচালিত হচ্ছে ইমিগ্র্যান্টদের দ্বারা। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আপেলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস হচ্ছেন সিরিয়ার ইমিগ্র্যান্টের পুত্র। রাশিয়ায় জন্মগ্রহণকারি সারজি ব্রিন হচ্ছেন গুগলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। নেটফিক্সের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মার্ক র্যান্ডলফ হচ্ছেন অস্ট্রিয়ান ইমিগ্র্যান্টের পুত্র। বায়োটেক ফার্ম কেলগিনের উদ্ভাবক সোল বেরার হচ্ছেন জার্মান ইমিগ্র্যান্ট।
এদিকে, হোমল্যান্ড ডিপার্টমেন্টের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ২০০৫ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত ১১ বছরে পারিবারিক ভিসায় ১ লাখ ৪১ হাজার ৫০১ জন বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। এর মধ্যে শুধু গত বছর এসেছেন ১৮ হাজার বাংলাদেশি। অর্থাৎ দিন যত গড়াচ্ছে বৈধ ভিসায় বাংলাদেশিদের আগমণের হারও বাড়ছে। এ অবস্থায় ট্রাম্পের মনোভাব অনুযায়ী পারিবারিক কোটা সংকুচিত করা হলে শুধু বাংলাদেশ নয়, বহু দেশ বঞ্চিত হবে আমেরিকার জীবনযাপনের প্রত্যাশা থেকে।
ট্রাম্পের এমন হুমকি-ধামকির ব্যাপারে ইমিগ্রেশন এটর্নী মঈন চৌধুরী বলেন, যা ইচ্ছা তাই করা সম্ভব নয়। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হতে পারেন, কিন্তু আইনের পরিবর্তনের ক্ষমতা কংগ্রেসের। এছাড়া, এক আকায়েদের কারণে পারিবারিক কোটা সংকুচিত করার প্রশ্নই উঠে না। শুধুমাত্র বাংলাদেশকে এ কোটা থেকে বাদ দেয়ারও সুযোগ নেই।
এটর্নী মঈন উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অনেক ভাল। বাংলাদেশের যে কোন প্রয়োজনে এখন সবচেয়ে বেশী সাহায্য-সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। রোহিঙ্গা ইস্যুতেও যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশী অর্থ ও মানবিক সহায়তা দিচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭/মাহবুব