যুক্তরাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও বিরল মৃত্তিকা, ধাতু এবং এসবের সংশ্লিষ্ট পণ্য-যেমন স্মার্টফোন-এর ওপর সম্ভাব্য নতুন শুল্ক আরোপের উদ্দেশ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এক নির্দেশনায় তদন্তের নির্দেশ দেন ট্রাম্প।
ওয়াশিংটন থেকে ফরাসি গণমাধ্যম এএফপি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্ক আরোপ এবং তা হঠাৎ বাতিলের সিদ্ধান্ত বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। এই নতুন তদন্তে যদি প্রমাণ হয় যে, এসব খনিজ এবং সংশ্লিষ্ট উপাদান আমদানি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে, তাহলে নতুন শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।
বিশ্ববাজারে বিরল মৃত্তিকা ধাতুর জোগানে চীন আধিপত্য বিস্তার করে আছে। যদিও নির্দেশনায় কোনো নির্দিষ্ট দেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি, তাতে বলা হয়েছে-যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে এমন কিছু বিদেশি উৎসের ওপর নির্ভরশীল যেগুলো দীর্ঘমেয়াদি, গুরুতর ও স্থায়ী সরবরাহ-ব্যাঘাতের ঝুঁকিতে রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, এই নির্ভরতা ‘জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি, মূল্য স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সহনশীলতার’ জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
যেসব আমদানি লক্ষ্যবস্তু হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কোবাল্ট, লিথিয়াম ও নিকেলসহ তথাকথিত ‘গুরুত্বপূর্ণ খনিজ’, বিরল মৃত্তিকা ধাতু, এবং এসব উপকরণ আংশিকভাবে ব্যবহৃত পণ্য-যেমন ইলেকট্রিক যান ও ব্যাটারি।
নির্দেশনায় বলা হয়, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং সেগুলোর উপাদান যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও জ্বালানি অবকাঠামোর জন্য অত্যাবশ্যকীয়। এগুলোর ব্যবহার দেখা যায় জেট ইঞ্জিন, ক্ষেপণাস্ত্র নির্দেশনা ব্যবস্থা, উন্নতমানের কম্পিউটিংসহ নানা ক্ষেত্রে।
বাণিজ্য বিভাগকে এই বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে ১৮০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শুল্ক আরোপের মতো পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা যেতে পারে।
এর আগে সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওষুধ আমদানির ওপর ‘জাতীয় নিরাপত্তা’ বিষয়ক একই ধরনের তদন্তের নির্দেশ দেন। একইভাবে সেমিকন্ডাক্টর ও চিপ নির্মাণ সরঞ্জাম নিয়েও পৃথক তদন্ত শুরু হয়েছে।
এই প্রক্রিয়া ১৯৬২ সালের এক আইনের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে, যা ট্রাম্পের আগের (২০১৭-২০২১) মেয়াদের আগে খুব একটা ব্যবহার হয়নি। তখন তিনি এই আইন ব্যবহার করে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন।
চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুনরায় ওই ‘সেকশন ২৩২’ আইনের আওতায় স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং একইসঙ্গে গাড়ির ওপরও শুল্ক পুনরায় চালু করেন।
চলতি বছর আবার প্রেসিডেন্ট পদে ফিরে আসার পর থেকে ট্রাম্প মিত্র ও প্রতিপক্ষ উভয়ের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করেছেন। বিশ্বের অর্থনীতিকে পুনর্গঠনের নামে এক বিশৃঙ্খল প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তিনি এসব শুল্ক আরোপ করছেন, যাতে করে নির্মাতারা যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসে।
সূত্র : রয়টার্স।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত