তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে সুবিধাবাদী মুক্ত রাখা জরুরি। পরপর তিনবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগে অনেকের আলস্য এসেছে। দলে অনেক অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে। অনুপ্রবেশকারীদেরও চিহ্নিত করে দলকে পরিশুদ্ধ করা প্রয়োজন। অনুপ্রবেশকারী, সুবিধাবাদীরা যাতে দলকে গিলে ফেলতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে। আমরা অনুপ্রবেশকারী ও সুবিধাবাদী মুক্ত আওয়ামী লীগ চাই।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি সাবেক এমপি ও রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর এলজিইডি ভবনের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি প্রমুখ।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আগামী বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও একটি দেশে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি থাকবে, স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি রাজনীতি করবে, এটা হওয়া উচিত নয়। যারা দেশটাই চাইনি, দেশের পতাকাটাই চাইনি, যারা দেশের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও তারা আস্ফালন করবে, তাদের রাজনীতি থাকবে, সেটা কোনো দেশে হওয়া সমীচীন নয়।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি সুবিধাবাদীদের রাজনৈতিক দল। রাজনীতিতে সুবিধাবাদীদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি ক্ষমতা দখল করার জন্য রাজনীতিবিদদের কেনাবেচার হাট বসিয়েছিলেন। মৌসুমে যেমন খেলোয়াড় বিক্রি হয়, ঠিক সেইভাবে অনেক রাজনীতিবিদ বিক্রি হয়েছিল। সেই ভাবেই গঠিত হয়েছিল বিএনপি। সুবিধাবাদীদের সমন্বয়ে গঠিত রাজনৈতিক দলের নাম হচ্ছে বিএনপি।’
রাজনীতিক নুরল আলম চৌধুরী প্রসঙ্গে বলেন তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের অনেকে যখন আত্মগোপনে অথবা ভয়ে মুখ খুলছে না, অনেকে মোস্তাকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, তখন মোস্তাকের কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করেছিলেন নুরুল আলম চৌধুরী। তিনি কখনো দলের বিরুদ্ধে কিংবা নেতার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাননি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যখনই দল বিপদের মুখে পড়েছে, অনেকেই বোল পাল্টিয়েছে। অনেকে নেতার বিরুদ্ধচারণ করেছে। ২০০৭ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা যখন গ্রেফতার হন, তখন অনেক নেতা বোল পাল্টিয়েছে। অনেক নেতা ভয়ে মুখ খোলেনি। অনেক নেতা তখন ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। কিন্তু নুরুল আলম চৌধুরী সেই কাজটি করেননি। তাই নুরুল আলম চৌধুরীর জীবন থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।’
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার/রেজা মুজাম্মেল