আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ বলেছেন, কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর যারা আঘাত হেনেছে, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া জনগণের দাবি। তাদেরকে শাস্তি দিতেই হবে।
আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ও নয়াদিল্লীর প্রেস মিনিস্টার শাবান মাহমুদ, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, অভিনেত্রী তারিন জাহান, সাংবাদিক মানিক লাল ঘোষ, সমীরণ রায় প্রমুখ।
হাছান মাহমুদ বলেন, যাদের কাছে ভাস্কর্য অগ্রহণযোগ্য, তাদের নিজের বা বাবার ছবিও তাদের রাখার কথা নয়। টেলিভিশনে তাদের চেহারা দেখানো এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা যে ভাস্কর্যবিরোধী পোস্ট দেন, তাদের বক্তব্য অনুযায়ী সেটিও তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবার কথা নয়। অতএব এই সমস্ত বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। আমি তাদের অনুরোধ জানাবো, দয়া করে ভাস্কর্য আর মূর্তি গুলিয়ে ফেলবেন না এবং মানুষকে ও আলেম সমাজকে বিভ্রান্ত করবেন না।’
আজকে ভাস্কর্য আর মূর্তিকে এক বানিয়ে ফেলা হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন ‘ভাস্কর্য পৃথিবীর সব দেশেই আছে এমনকি সৌদি আরবেও শাসকদের অবয়বসহ বহু ভাস্কর্য আছে। ইরানে ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির ভাস্কর্যসহ বহু ভাস্কর্য আছে, তুরস্কে আছে। যারা পাকিস্তানি ভাবধারায় বিশ্বাস করে, পাকিস্তান ভেঙে গেল বলে যারা বুক চাপড়ায় তাদের অনুসারীদের সেই পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র ভাস্কর্য আছে, কবি ইকবালের ভাস্কর্য আছে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ও নয়াদিল্লীর প্রেস মিনিস্টার শাবান মাহমুদ বলেন, জাতির পিতার বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির স্থান হবে না। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ এটা মীমাংসিত বিষয়। বঙ্গবন্ধুর অপর নাম বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে যাদের জ্বালা ধরে তারা পাকিস্তান-আফগানিস্তান চলে যান।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলাম। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র জমা দিয়েছি, কিন্তু টেনিং জমা দেইনি। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে মৌলবাদীদের আস্ফালন মেনে নেয়া হবে না।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন না হওয়ায় আজকে মুক্তিযোদ্ধারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাদের ঐক্যবদ্ধ করতে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্বাচন দরকার। ঐক্যবদ্ধ করা দরকার।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত