পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির বিরুদ্ধে একসাথে লড়াই করতে হবে। তিনি অভিযোজন এবং প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে লড়াইয়ের উদ্দেশ্যে প্রকৃতি ভিত্তিক প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
পরিবেশ মন্ত্রী আজ রাতে ঢাকায় তার সরকারি বাসভবন থেকে ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কীভাবে প্রকৃতি নির্ভর সমাধানগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে?’ শিরোনামে বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় এসব কথা বলেন।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসমূহ প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের কথা বিবেচনা করে করা উচিত। উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের ব্যবহারকে সংহত করার মাধ্যমে আমরা একই সাথে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষয়ক্ষতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব হ্রাস এবং প্রকৃতি নির্ভর সম্প্রদায়ের জীবিকার সুযোগগুলো বাড়াতে পারি।
শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সরকার জলবায়ু সহিষ্ণুতা বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন, কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা (বিসিসিএসএপি) আরও ফোকাসযুক্ত ও কর্মমুখী করতে সংশোধন ও আপডেটের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (ন্যাপ) গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ন্যাপটি শেষ হওয়ার পরে, আমাদের অভিযোজন উচ্চাকাঙ্ক্ষাটি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হবে।
জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আরও বলেন, বিভিন্ন খাতকে জলবায়ু সহিষ্ণু করতে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ২৫% গাছের আওতা অর্জনের অংশ হিসাবে চলতি বছরের জুলাই-অক্টোবর মাসে সারাদেশে এক কোটি গাছ রোপণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের প্রশান্ত মহাসাগর ও পরিবেশ মন্ত্রী লর্ড গোল্ডস্মিথ এবং বিদেশ, কমনওয়েলথ এবং উন্নয়ন অফিসের উন্নয়ন পরিচালক জুডিথ হারবার্টসন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এর অ্যাডভোকেট এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবি সমিতির প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানা হাসান, ডব্লিউডব্লিউএফের ফ্রেশওয়াটারের প্রধান উপদেষ্টা ডেভ টিকনার এবং রিল্ডিং ব্রিটেনের পরিচালক প্রফেসর অ্যালাস্টার ড্রাইভার এফসিআইইএম বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক সালেমুল হক এবং সাইমন ম্যাক্সওয়েল। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কীভাবে বাংলাদেশে প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে শীর্ষক প্রথম কীনোট পেপার উপস্থাপন করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমেরিটাস ড. আইনুন নিশাত এবং যুক্তরাজ্যের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও প্রশমন সংক্রান্ত প্রাকৃতিক ভিত্তিক সমাধান দ্বিতীয় কীনোট পেপার উপস্থাপন করেন ন্যাচারাল ইংল্যান্ডের অধ্যক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ডা. মাইক মোরক্রাফট।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক