চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা দিন দিন বাড়ছে। প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বন্দর স্ব-মহিমায় উদ্ভাসিত হচ্ছে। আমাদের পোর্ট লিমিট বাড়ানো হয়েছে। বিশ্বের সেরা ১০০ কনটেইনার বন্দরের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরকে ৫৮ থেকে ৩০ এ আনার লক্ষ্যে কাজ করছি। তাই অদক্ষ কাউকে বন্দরের দায়িত্ব দিতে চান না বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
আজ রবিবার বেলা ২টায় শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে চট্টগ্রাম বন্দরের উপদেষ্টা কমিটির ১৪তম সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করে, দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। চাকরির ক্ষেত্রে বন্দর, নদী, সমুদ্র কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দেবে। কিন্তু বিনা অভিজ্ঞতায় চাকরি হবে না। দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। অদক্ষ মানুষকে চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্ব দিতে চাই না।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর সংশ্লিষ্ট সড়কগুলো উন্নয়নে ব্যবস্থা নেবে। কর্ণফুলী নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করছি। বন্দর চালু রাখতে গেলে ড্রেজিং করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর চালু আছে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বে-টার্মিনালে অনেক আগ্রহী বিদেশি বিনিয়োগকারী আছে। সমঝোতা হলে চূড়ান্ত হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, ওয়াসিকা আয়েশা খান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম, সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি একেএম আলতাফ হোসেন, নুরুল কাইয়ুম খান, বিজিএমইএর নাসিরুদ্দিন চৌধুরী, সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন, বাফার পরিচালক খায়রুল আলম সুজন, নুরুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে বন্দর সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির ১৪ তম সভায় বন্দরের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে বেসরকারি কনটেইনার ডিপো বা অফডক সরানো, অফডকের বিভিন্ন সেবার বিল কমানো, বন্দরের নিলাম ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ধ্বংস কার্যক্রম জোরদার করা, যানজট, বন্দরের বিশেষায়িত হাসপাতাল, টোল রোড, বন্দরের স্টেক হোল্ডার ও বাণিজ্য সংগঠনের প্রস্তাবনা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ সময় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে কমিটির সদস্যরা বলেন, বাংলাদেশের ৯৮ ভাগ বাজেট বাস্তবায়ন হয় নিজস্ব অর্থায়নে। বাংলাদেশ নিজস্ব টাকায় পদ্মা সেতু করছে। পারমাণবিক ক্লাবে যুক্ত হয়েছি। মাতাবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল হচ্ছে। আগে দেশে মহাসড়ক ছিল না, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল কত কিছু হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন হচ্ছে। বিরাট সম্ভাবনার বাংলাদেশ নেতিবাচক সংবাদ চায় না।
উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ্যে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনার সংকটকালে চট্টগ্রাম বন্দর সচল রেখেছেন। এটা চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে লেখা থাকবে। আপনারা নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। আপনারা বন্দর সচল রাখায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষ করে এনবিআর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। বন্দরের সদস্য মো. জাফর আলমের সঞ্চালনায় সভায় ১৩তম সভার সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি তুলে ধরেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আবুল কালাম আজাদ।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর