দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বের কাছে রোল মডেল। দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সারা বিশ্বে প্রশংসনীয়। এখন দুর্যোগে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকাংশে কমে গেছে। এর মূল কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা।
বুধবার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের আয়োজিত বাংলাদেশে দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস ও প্রশমনে আগাম সতর্কবার্তা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা গবেষণায় পিছিয়ে আছি। আমাদের আরও অনেক বেশি গবেষণা করতে হবে। আমরা এখন বন্যার আগাম সতর্কবার্তা ৯ দিন আগে দিতে পারি। বজ্রপাত হওয়ার ৪০ সেকেন্ড পূর্বে খবর পৌঁছে যায় মানুষের কাছে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএমডিসি) প্রতিটি বিল্ডিংয়ে সাড়ে ৯ মাত্রার স্কেল অনুযায়ী মান নির্ধারণ করে দিয়েছে। তিনশো থেকে চারশো বছর আগের বিল্ডিংগুলো ধ্বংস করে ২০৭১ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। বাংলাদেশ এখন বসে নেই কোথাও, পিছে নেই দুর্যোগ মোকাবিলায়।
তিনি বলেন, আমাদের জাতির পিতা ৫০ বছর আগে ভাবনা দিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে। তিনি বাংলাদেশ রেড ক্রস প্রতিষ্ঠাতা করেন। ১৯৭৩ সালে সিপিপি প্রতিষ্ঠা করে ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়েছেন এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেন। এজন্য আজকে নারীরা অনেক সতর্ক। তারা নিজেরাই দুর্যোগপূর্ণ মানুষকে রক্ষা করেন। ১৯৯১ সালে দুর্যোগে ১০ লাখ মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বর্তমানে এ সংখ্যাকে কমিয়ে এনেছে। সব দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা দেয়া হচ্ছে এখন। উপকূলীয় অঞ্চলে আজ মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নেমে এসেছে। আমরা জনসাধারণকে আগাম সতর্কবার্তা দিচ্ছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, প্রকৃতির ক্ষতি করে কখনো শিল্পায়ন করা যাবে না আমাদের। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি ক্যাম্পাসে ফায়ার সার্ভিসের মহড়া এবং সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠান প্রতি বছরে একবার হলেও করা উচিত। তাহলে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রাকৃতিক ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারবে।
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কিউ. এম মাহবুব। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এবং লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান খন্দকার।
এছাড়াও মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহেদুর রশীদ।
বিডি প্রতিদিন/এমআই