রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব, আইনি ও প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা এবং নির্বাচন না হওয়াসহ কয়েকটি কারণে বর্তমান জেলা পরিষদ অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে- এমন মতামত তুলে ধরেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
আজ বুধবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি এ মতামত তুলে ধরে। এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা। এতে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষক নাহিদ শারমীন।
অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'নির্বাচন না হওয়া সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ জন্য আমরা আইনগতভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে পরিষদ গঠনের কথা বলেছি।'
টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন বলেন, 'স্থানীয় সরকারে কেন্দ্রীয় প্রভাব থাকবে না, এটাই আমরা চাই।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ স্তরটিকে শক্তিশালী করতে সংবিধান ও আইন অনুযায়ী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জেলা পরিষদ গঠনসহ বেশ কিছু কাজ করতে হবে। নির্বাচন না হওয়া, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দলীয় প্রশাসকের মাধ্যমে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনাসহ বিভিন্ন কারণে জেলা পরিষদ সরকারের ওপর নির্ভরশীল একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। দলীয় পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করে প্রশাসনিক নিয়োগ দেওয়ায় জেলা পরিষদ ক্ষমতাসীন দলের একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ছাড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কাজ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জেলা পরিষদের প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এসব কারণে জেলা পরিষদ একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড়াতে পারছে না। এ জন্য টিআইবি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পরিষদ গঠনসহ নয়টি সুপারিশ করেছে।
সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জেলা প্রশাসকের কাজের পরিধি নির্বাহী দায়িত্বে সীমাবদ্ধ রেখে পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসকের কাজের সুষম বণ্টন করতে হবে; জেলা পরিষদের নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব ছয় মাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে; জেলা পরিষদের নিজস্ব আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে।