আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা আজ বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। ফলে ভোট চাইতে ভোটারদের কাছে যেতে এখন আর প্রার্থীদের সামনে কোন বাধা নেই। এজন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ফজরের নামাজের পর থেকেই প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। অনেকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দোয়া চাইছেন। আবার কেউ কেউ বাজারে দোকানে দোকানে ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন।
মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা নিজ সমর্থনে ভোট চাইতে পারবেন। তবে ১৪ ডিসেম্বর সব প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার আগে দলীয় প্রার্থীরা প্রতীক নিয়ে প্রচারণা চালাতে পারবেন কিনা- তা মঙ্গলবার রাত ১০টা পর্যন্ত স্পষ্ট করেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ২৩৫ পৌরসভায় রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনীত প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক সবারই জানা আছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কে কোন প্রতীক পাচ্ছেন তা নির্ধারিত হবে ১৪ ডিসেম্বর। দলীয় প্রতীকে প্রচার শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে দলীয় প্রার্থীদের। এক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বৈষম্যের শিকার হবেন বলে আশংকা তাদের।
এদিকে, প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে ডিজিটাল প্রচারের সুযোগও পাচ্ছেন প্রার্থীরা। ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড, ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও ব্যানার, বিলবোর্ড ব্যবহার করা যাবে। টেলিভিশনসহ ইলেকট্রনিক মাধ্যমেও বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে। তবে নির্বাচনী ব্যয়সীমার মধ্যে থেকে প্রচার চালাতে হবে।
নির্বাচনী আচরণবিধিতে আরও বলা হয়েছে, প্রার্থীর পোস্টার সাদা-কালো রঙের এবং আয়তন ২.৭ মিটার হতে হবে। নির্বাচনী প্রতীকের আকার, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ বা উচ্চতা কোনোভাবে তিন মিটারের বেশি হতে পারবে না। দলীয় প্রধানের ছবি ও প্রতীকসংবলিত পোস্টার ও লিফলেট প্রচারে ব্যবহার করতে পারবেন প্রার্থীরা। তবে কোনো গেট বা তোরণ নির্মাণ, ৩৬ বর্গমিটারের বেশি স্থান নিয়ে প্যান্ডেল বা ক্যাম্প করা যাবে না। ক্যাম্পের ভেতরে টেলিভিশন বা প্রচারযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
প্রার্থীদের পক্ষ হয়ে সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। ফলে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সিটি করপোরেশনের মেয়রদের প্রচারে অংশ নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংসদ সদস্য। ফলে তাঁরা প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। তবে সরকারি সুবিধাভোগী না হলে দলীয় প্রধানদের প্রচারণায় অংশ নিতে বাধা নেই। সে হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রচারণা চালাতে পারবেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তি ছাড়া সবাই প্রচারণা চালাতে পারবেন। তিনি দলীয় প্রধান হোন বা সাধারণ মানুষ, কোনো সমস্যা নেই। তবে বিশাল বহর নিয়ে মিছিল, শোভাযাত্রা বা কোনো ধরনের শোডাউন করা যাবে না।
উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর ২৩৫ পৌরসভায় তফসিল দিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। এ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ছিল ৩ ডিসেম্বর, যাচাই-বাছাই ৫ ও ৬ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৩ ডিসেম্বর।
বিডি-প্রতিদিন/০৯ ডিসেম্বর, ২০১৫/মাহবুব