শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের পদাতিক বাহিনীর ৮৫০ সদস্যের আরেকটি সমন্বিত শান্তিরক্ষী দল সাউথ সুদানে পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে জাতিসংঘ। এর আগে গত অক্টোবরেও সাউথ সুদানে ২৬০ সদস্যের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি পাঠানোর অনুরোধ জানায়।
এ দুটি টিমের যোগদান শেষে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ট্রুপস সরবরাহকারী হিসেবে বাংলাদেশ দ্বিতীয় শীর্ষে আরোহন করবে। বর্তমানে ৮৩৬২ ট্রুপস সরবরাহ করে শীর্ষে রয়েছে ইথিওপিয়া। আর ১৩টি শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৭ হাজার ৯৬০ জন দায়িত্ব পালন করছে। আজ শুক্রবার নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনকে সাউথ সুদানের উয়াও অঞ্চলে ৮৫০ সদস্যের সমন্বিত শান্তিরক্ষী দল অবিলম্বে প্রেরণের পত্র দিয়েছে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস কিপিং অপারেশন।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মিশনের প্রেস সেক্রেটারি নূরএলাহী মিনা এনআরবি নিউজকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘দ্রুত ও সফলভাবে নতুন এই পদাতিক ব্যাটেলিয়নটি প্রেরণের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ্য, ‘২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত “লিডারস্ সামিট অন পিস কিপিং” এর সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানের ভিত্তিতেই জাতিসংঘ থেকে এ সকল প্রস্তাব পাওয়া গেছে। ওই সময় থেকেই বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জাতিসংঘের তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও প্রাসংঙ্গিক আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করে আসছে।’
শান্তিরক্ষা মিশনের চাহিদা অনুযায়ী শুধু ট্রুপস নয়, প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জাম সরবরাহেও বাংলাদেশ ইতিপূর্বে অনেক সুনাম অর্জন করেছে বলে জানান মিনা।
জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী প্রেরণের নতুন এই দুটি প্রস্তাব বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানে বাংলাদেশের সামর্থ্য এবং প্রায় আড়াই দশক ধরে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সাহসিকতাপূর্ণ কাজের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশ্বাস ও আস্থারই প্রতিফলন।
বর্তমানে ১৩টি শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ৬ হাজার ৮৫০ জন শান্তিরক্ষী কাজ করছেন যার মধ্যে ১৯৮ জন নারী সদস্য রয়েছেন। এছাড়া, এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশের প্রায় ১ লাখ ৪৬ হাজার ১৪৩ জন সদস্য ৪০টি দেশের ৫৪টি শান্তিরক্ষা মিশনে সফলতার সাথে কাজ করেছেন।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ সুদান বিশেষ করে গোটা বিষুবীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিভেদ সংকুল। দক্ষিণ বাহার আল গজল স্টেস্টের অবস্থা খুই উদ্বেগজনক, যেখানে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হিংস্বাত্মক কর্মকাণ্ডের ফলে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ও উচ্ছেদের মতো ঘটনা অনবরত ঘটছে।
বিডি প্রতিদিন/ ০২ ডিসেম্বর ২০১৬/ এনায়েত করিম-৪