চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল। বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে নগরীর ভাটিকাশর পৌর গোরস্থানে এই মনখারাপের গাড়িচালককে শোয়ানো হয় মাটির বিছানায়। এসময় অগণিত ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী ও অনুসারীদের চাপা আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠে সেখানকার পরিবেশ। এ সময় মূর্ছা যাচ্ছিলেন বাবা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাড. জহিরুল হক খোকা।
এর আগে, মাগরিবের নামাজের পরপরই আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে কবি শাকিলের দ্বিতীয় জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় নিজের সন্তানের স্মৃতি তুলে ধরে আহাজারি করেন তারা বাবা। ঢুকরে কেঁদে তিনি বলেন, আমার সন্তানের লাশ আমার কাঁধে নিতে হবে। এর চেয়ে বড় কষ্ট আর কী হতে পারে। তখন শোকার্ত মানুষের ভিড়ে সেখানে সৃষ্টি হয় জনারণ্যের।
এ সময় ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, প্রধানমন্ত্রীর এপিএস সাইফুজ্জামান শেখর, আশরাফুল আলম খোকন, এফবিসিসিআই পরিচালক আমিনুল হক শামীম, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউজ্জামান বদি, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান, ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগ নেতা শাহীনুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, দুপুর সোয়া ২টার দিকে ঢাকা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের মরদেহ ময়মনসিংহের বাঘমারা বাসায় নিয়ে আসা হয়। এরপর প্রিয় মানুষটিকে শেষ বারের মতো এক নজর দেখতে সকাল থেকেই শহরের ৩৮নম্বর বাঘমারা শাকিলের বাসায় ভিড় জমায় তার অগণিত ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী ও অনুসারীরা।
প্রথমে প্রিয় সন্তানের লাশ দেখতে আসেন বাবা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা প্রশাসক অ্যাড. জহিরুল হক খোকা, পরে মা শিক্ষিক নুরুন্নাহার হক টগর ছেলের মরদেহ দেখে বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তখন এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয় সেখানে। পরে আত্মীয় স্বজনর ও প্রতিবেশিরা শেষ বারের মতো প্রিয় মানুষের মরদেহটি দেখেন।
পরে বিকেল ৪টায় সকলের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শাকিলের মরদেহ নগরীর টাউনহল মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। বাদ মাগরিব আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে জানাযা শেষে পৌনে ৭টার দিকে ভাটিকাশর পৌর গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
১৯৬৮ সালে ২০ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন মাহবুবুল হক শাকিল। তার বাবা আইনজীবী ও মা শিক্ষক। মাহবুবুল হক শাকিলের ছোট ভাই নাঈমুল হক বাবু ডেইলি স্টার পত্রিকার সহ-সম্পাদক। আইনজীবী স্ত্রী নিলুফার আনজুম পপি ও শাকিলের সংসারে একমাত্র মেয়ে জাকিয়া রুপাবা মলি।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হিসেবে কাজ করলেও শাকিল একজন কবি হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তার কবিতা সর্ব মহলে প্রশংসিত।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ ডিসেম্বর, ২০১৬/মাহবুব