রাজাকারের তালিকায় দেশের বিভিন্ন জেলার প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের নাম থাকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। একইসঙ্গে বলেছে, রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম দেখে গোটা জাতি স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ। ৪৮ বছর পরে যে প্রশ্নবিদ্ধ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে প্রকৃত রাজাকারদের বাঁচাতেই এ ধরনের কাজ করা হয়েছে বলে জনমনে প্রশ্ন ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত কিনা তা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় বাসদ।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় একজন যোদ্ধার কাছে সবচেয়ে গৌরব এবং সম্মানের। অন্যদিকে, রাজাকার শব্দটি বাংলাদেশে সবচেয়ে ঘৃণীত। কোন মুক্তিযোদ্ধার নাম যদি রাজাকারের তালিকায় থাকে তাহলে এর চেয়ে অপমানের আর কিছু হতে পারে না। বিবৃতিতে অবিলম্বে বিভ্রান্তিকর, ভুলে ভরা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত তথাকথিত রাজাকারের তালিকা বাতিল করে নতুন ও সঠিক তালিকা প্রণয়নের দাবি জানান। একই সাথে এই ভুয়া তালিকা প্রণয়নের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বরিশালের বাসদ এর সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তীর বাবা বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট তপন কুমার চক্রবর্তী ও তার দিদিমা ঊষা রাণী চক্রবর্তীর নাম প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। অথচ তপন কুমার চক্রবর্তী সম্মুখ সমরে যুদ্ধ করা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার পিতা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। মন্ত্রণালয়ের গেজেটেও তিনি একজন তালিকাভুক্ত ও সম্মানী ভাতা প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। অথচ একই মন্ত্রণালয়ে তাকে কিভাবে রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলো? এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত কিনা তা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, রাজশাহীর বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, ভাষা সৈনিক, একুশে পদকপ্রাপ্ত, মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু, সিরাজগঞ্জের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, এক সময়ের জাসদ নেতা পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক এমপি লতিফ মির্জা ও সিরাজগঞ্জ জেলা জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আলম, বরিশালের বিশিষ্ট সাংবাদিক মিহির লাল দত্তের নামও রাজাকারের তালিকায় রয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যা শুধু দুঃখজনকই নয়, বর্তমান সরকার ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের চরম দায়িত্বহীনতার প্রকাশ বলে আমরা মনে করি।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব