পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আয়োজিত সভায় বক্তারা বলেছেন, ফসলি জমি কমে যাওয়ার পরেও কৃষিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। এই সাফল্যের পেছনে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি সেই কৃষকরাই সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিকেজি ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয় ২০ থেকে ২২ টাকা। আর কৃষক তা বিক্রি করতে পারছেন ১২ থেকে ১৩ টাকা কেজি দরে। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়বে। এ অবস্থা থেকে কৃষক ও কৃষিকে বাঁচাতে ধানের উৎপাদন খরচের ২৫% লাভে ধানের বাজার মূল্য নিশ্চিত করাসহ সরকারের ধান মজুদ ক্ষমতা ১ কোটি টনে উন্নিত করার দাবি জানানো হয়।
আজ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ধানের ন্যায্যমূল্যঃ সংকট ও প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন পবার সভাপতি আবু নাসের খান। ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজেনাস নলেজের বারসিকের পরিচালক সৈয়দ আলী বিশ্বাস। বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাস, কৃষক সমিতির উপদেষ্টা জামাল হায়দার মুকুল, পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আব্দুস সোবহান, হাওর অঞ্চলবাসীর সমন্বয়ক ড. হালিম দাদ খান, কৃষিবিদ এবিএম তৌহিদুল আলম, কবি লিলি হক, কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এ এস এম বদরুল আলম, প্রকৌশলী আনোয়ার, সঞ্চলনা করেন ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল।
মূলপ্রবন্ধে সৈয়দ আলী বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশের কৃষিতে শ্রমশক্তির ৪০ শতাংশ জড়িত। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী ধান উৎপাদনের প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বর্তমানে শীর্ষে রয়েছে। তারপরও ধানের বাজারমূল্য কম থাকায় কৃষকরা বর্তমানে দিশেহারা। প্রতিবছর লোকসান গুনে গুনে কৃষির উপর দিনদিন আস্থা হারিয়ে ফেলছে কৃষকরা। কৃষক ফসলের দাম না পেলে কৃষি ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশার খোঁজে শহরের চলে আসবে। এতে শহরে চাপ আরও বেড়ে যাবে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কৃষকদের রক্ষা করতে উৎপাদিত ধানের নায্যমূল নিশ্চিত করাসহ দশদফা দাবি তুলে ধরা হয়। এরমধ্যে রয়েছে প্রতিটি ইউনিয়নে এমনকি ক্ষেত্রভেদে কৃষক ও স্থানীয় পর্যায়ে ধানসহ কৃষিপণ্য মজুতকরণের শক্তিশালী ব্যবস্থা গড়ে তোলা। সরকারের ধান মজুদ ক্ষমতা ১ কোটি টনে উন্নিতকরণ। মোট উৎপাদন খরচের ২৫% লাভে ধানের বাজার মূল্য নিশ্চিত কররা। কৃষিপণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে পণ্যের আর্দ্রতা, রাসায়নিকের উপস্থিতিসহ পণ্যের মান যাচাইয়ের নামে কৃষক হয়রানি বন্ধকরণ।
পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান বলেন, কৃষিপ্রধান এই দেশে কেনো খাদ্য আমদানি করতে হবে ? প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য আমদানি রোধ করতে হবে। দেশের কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে পণ্য কিনতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার