কক্সবাজারে একটি হোটেলে সম্প্রতি স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে নারী পর্যটককে ধর্ষণ করেন আশিকুল ইসলাম আশিক ওরফে টনের্ডো আশিক। ভুক্তভোগী ও তার স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই আশিক সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ধর্ষণের ঘটনার পর কক্সবাজারে দুই দিন আত্মগোপনে থাকার পর পটুয়াখালীতে আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন আশিক। পরে একটি এসি মাইক্রোবাস ভাড়া করে পটুয়াখালীতে যাওয়ার সময় মোস্তফাপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আশিক ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেন। আশিক ও তার সহযোগীরা ওই নারী ও নারীর স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। ভুক্তভোগী ও তার পরিবার চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর লাবণী বিচ এলাকার রাস্তা থেকে ভুক্তভোগী নারীকে সিএনজিতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতার আশিক ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ ও জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে আটক করে রাখেন।
বিষয়টি ব্যাপকভাবে স্থানীয় পর্যায়েও বিভিন্ন মিডিয়াতে জানাজানি হলে আশিক আত্মগোপণে চলে যান। এরপর বেশভূষা পাল্টে তিনি দুই দিন কক্সবাজারে আত্মগোপন করেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার টর্নেডো আশিক পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন রকম দখল ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। তিনি পর্যটন এলাকার সুগন্ধা নামক স্থানে ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট জোরপূর্বক কম টাকা দিয়ে ভাড়া নিয়ে ক্ষেত্র বিশেষে দ্বিগুণ ও তিনগুণ ভাড়া সংগ্রহ করে মূল মালিকদের বঞ্চিত করে থাকেন। বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অবৈধ দখল করে ও চাঁদা দাবি করে থাকেন। তাঁর চক্রের সদস্যরা রাতে সমুদ্র সৈকতে আসা পর্যটকদের হয়রানি, মোবাইল ছিনতাই, ফাঁদে ফেলা ও নিয়মিত ইভটিজিং করতেন। পাশাপাশি হোটেল-মোটেল জোনে বিভিন্ন পর্যটকদের সুযোগ বুঝে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করতেন।
আশিকের নামে ইতোমধ্যে কক্সবাজার সদর থানায় অস্ত্র, মাদক, নারী নির্যাতন ও চাঁদাবাজিসহ ১২টি মামলা চলমান রয়েছে। পুলিশ তাকে পাঁচবার গ্রেফতার করে। দীর্ঘদিন তিনি কারাভোগ করেছেন। কক্সবাজারে পর্যটক এলাকায় একটি অপরাধী চক্রের মূলহোতা ছিলেন আশিক । চক্রে তার নিয়ন্ত্রণে ৩০-৩৫ জন সদস্য কাজ করতেন। পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে চুরি, ছিনতাই, অপহরণ, জিম্মি, চাঁদাবাজি, জবরদখল, ডাকাতি ও মাদকের কারবারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিলেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ